Wednesday, July 4, 2012

A new beginning…














Time..
please, give me back my childhood
I just wanna change,
A new beginning…

I was sentient about everything,
but did nothing to impede it.
How could I forget all these things?
How do I forgive myself?

Wanna get back my childhood.
Just wanna start a new life.
A new beginning…

Making dreams come true,
destroyed and stolen by me.
I wanna witness cheerful eyes,
made fearful by me.

Just wanna go back to my childhood
Refresh my life…
A new beginning…


প্রকাশকালঃ 4 জুলাই ২০১২

http://ns.bdnews24.com/blog/en/index.php/shuptobibek/1441#more-1441

অপুষ্টিকে ঘিরে পুষ্টিকর ব্যবসা…

বিভিন্ন পত্রিকা মারফত অবগত হলাম যে, সরকার দাবি করেছে, গত চার বছরে দেশের পুষ্টি-পরিস্থিতির কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।

অন্যদিকে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের গবেষণা বলছে, দেশের বিভিন্ন এলাকার মধ্যে পুষ্টিবৈষম্য বেড়েছে। খাদ্যনিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চলগুলোতে ক্ষুধা ও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে।

জাতিসংঘ শিশু তহবিলের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ মো. মহসীন আলী বলেন, বাংলাদেশে যত শিশু মারা যায়, তাদের প্রায় ৫০ শতাংশের মৃত্যুর কারণ অপুষ্টি।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষণার একটিই উপসংহার, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অপুষ্টি একটি বড় সমস্যা

একটি শিশুর ছয় মাস বয়স পর্যন্ত তার দেহের পুষ্টি আসে মায়ের বুকের দুধ থেকে। শিশুর পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করতে প্রসুতি মাকে পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়। ৫/৬ মাস পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে পুষ্টিকর শক্ত খাবার দিতে হয়। রঙিন সবজি, ভাত, রুটি, সুজি, ফল-মূল এবং মাছ বা মুরগি। আর একটু বড় হলে ডিম।

মোটা দাগে ভাগ করলে বাংলাদেশের মানুষকে প্রধানত দুটি দলে ভাগ করা যায়।

একদিকে, একদল মানুষ, নুন দিয়ে ভাত খেয়েই জীবন পার করে দিচ্ছে… এতে শিশু বা মা কারোরই পুষ্টি নিশ্চিত হচ্ছে না।

অপরদিকে, আরেকটি দল ফাষ্ট ফুড, চকলেট, কোক, ভাজা-পোড়া, জুস কিংবা বিস্কুট খেয়েই দিন পার করছে… তাদেরও কিন্তু পুষ্টি নিশ্চিত হচ্ছে না।

দেখা যাচ্ছে দুটো দলই অপুষ্টিতে ভোগা ভবিষ্যত প্রজন্ম উপহার দিচ্ছে।

ইহাই উদ্বিগ্ন হবার জন্য যথেষ্ট।

আমি উদ্বিগ্ন আরও একটি কারণে…

যখনই কোন সমস্যা জাতির সামনে তুলে ধরা হয় তখনি একধরণের ব্যবসায়িক সুযোগ নিজ উদ্যোগে তৈরী হয়। আবার ইহাও শোনা যায় গবেষণার মাধ্যমে কোন একটি সমস্যা কে জাতির সামনে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে উপস্থাপন করার পিছনে ব্যবসায়ীদেরও একটি পরোক্ষ ইন্ধন থাকে। কারণ সমস্যা সমাধানের মহৌষধ যে তাদেরই হাতে।

কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বর্তমান সরকারের আমলে বিগত তিন বছরে জিডিপি গড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। জাতীয় আয় বেড়ে হয়েছে মাথাপিছু ৮৪৮ মার্কিন ডলার। দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে কমে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।”

তথ্যের সঠিকতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকলেও… ইহা সহজে অনুমেয়… যে দেশের দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ সে দেশের মানুষের একটি বড় অংশ অপুষ্টিতে ভোগা অসম্ভব কিছু নয়।

তবে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা আমি অস্বীকার করছি না।

সমস্যাটা তো বোঝা গেল…? কিন্তু এরপর কি…? সমাধানের উপায় কি…?

পরিমিত এবং সুষম খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

পৃথিবীর অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর ৮০ শতাংশ রয়েছে মাত্র ২০টি দেশে, সেসব দেশে জোরালো পুষ্টি প্রকল্প গ্রহণ করলে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বেশ কমানো সম্ভব।

পুষ্টি কার্যক্রমে চার ধরনের সুযোগ মানুষের জন্য সৃষ্টি করা উচিত—তত্ত্বাবধান, অর্থনৈতিক সম্পদ আহরণ ও সংগ্রহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়ে সরাসরি পুষ্টি জোগান দেওয়ার ব্যবস্থা, মানব ও প্রাতিষ্ঠানিক সম্পদকে শক্তিশালী করে তোলা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক খুরশীদ জাহান একটি পত্রিকার মাধ্যমে বলেছেন, পুষ্টিজ্ঞান থাকা জরুরি। তবে মূল বিষয় হলো, পুষ্টিকর খাদ্যের সহজপ্রাপ্যতা আছে কি না, মানুষের পুষ্টিকর খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে কিনে খাওয়ার সামর্থ্য আছে কি না। এ ছাড়া শিশুরা টিকা পাচ্ছে কি না, পরিবেশ যথেষ্ট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কি না, রান্না করার পদ্ধতি কী ইত্যাদি বিষয়ের ওপরও পুষ্টি-পরিস্থিতি নির্ভর করে।

বর্তমানে দেশে অপুষ্টি দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরণের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

দাতা সংস্থাগুলো অপুষ্টি দূর করার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের ব্যবস্থাপত্র দিয়ে আসছেন। কিন্তু তারা তাদের ব্যবস্থাপত্রে যে মহৌষধ ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন তার বেশীরভাগই বিদেশকেন্দ্রিক।

এর মধ্যে কিছু মহৌষধ হলো…

“পুষ্টি প্যাকেট বা স্প্রিংকেল”, এই প্যাকেটের ভিতরে পাউডার জাতীয় একধরণের মহৌষধ বিদ্যমান…যা সেবনে অপুষ্টি দূর হবে বলে অনেক দাতা সংস্থা মনে করেন।

অপুষ্টি দূরীকরণের আরও একটি মহৌষধ হল “পুষ্টি বিস্কুট”… এই বিস্কুটের পুষ্টি উপাদান বিদেশ থেকে আমদানিকৃত। এই বিস্কুট চর্বণে অপুষ্টি দূর হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনেকের ধারণা।

“পূষ্টি আটা”…এই মহৌষধটি দেখতে অনেকটা দেশিয় আটার মতো, কিন্তু দানাদার, এর পুষ্টি উপাদানও বিদেশ থেকে আমদানিকৃত..।

এছাড়াও রয়েছে… “পুষ্টি বার” নামক আরও একটি মহৌষধ… যাহা দেখিতে অনেকটা চকলেট বারের মতো… এই পুষ্টি বার গুলোও বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে…

এই প্রত্যেকটি মহৌষধ বা এর পুষ্টি উপাদান বিভিন্ন দেশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো সরবরাহ করে থাকে… বিভিন্ন দাতা সংস্থার মাধ্যমে…

দেশের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এম কিউ কে তালুকদার ২৩ জুন ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জানান, দাতা সংস্থাগুলো এখন পরামর্শ দিচ্ছে নতুন আরও একটি মহৌষধের, যার নাম “রেডি টু মেক থেরাপিউটিক ফুড”। এই পথ্যটিও বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। দাতা সংস্থাগুলো ভারতেও অপুষ্টি দূরীকরনের লক্ষ্যে এই মহৌষধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিল, কিন্তু ভারত তীব্রভাবে এতে বাধা দেয়।

বিদেশী বিশেষজ্ঞদের বিদেশী মহৌষধের পাশাপাশি দেশিয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন অপুষ্টি দূর করার জন্য দেশি দানাদার শস্য, সবজি, ডাল ও তেল দিয়ে তৈরি খিচুড়িই নাকি যথেষ্ট।

এ সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেন, দাতা সংস্থাগুলো বিদেশ থেকে খাবার কিনে দেশের অপুষ্টি সমস্যা সমাধানের যে কথা বলছে, তা যুক্তিযুক্ত নয়। তাঁর মতে, দেশীয় পদ্ধতিতে এর সমাধান খোঁজা উচিত।

কিন্তু খিচুড়ি বা দেশিয় উপাদানে তৈরী মহৌষধের ব্যাপারে অপুষ্টি দূরীকরণ কার্যক্রমে জড়িত দেশি-বিদেশি বেশীরভাগ সংস্থারই তেমন আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না… পাছে অপুষ্টিকে ঘিরে আন্তর্জাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর পুষ্টিকর ব্যবসা অপুষ্টির স্বীকার হয়।


প্রকাশকালঃ ২ জুলাই ২০১২

http://blog.bdnews24.com/rananathan/105900

Sunday, July 1, 2012

মাহফুজুর রহমান… ডক্টরেট ডিগ্রীধারী গবেট…

সর্ববিষয়ে নিজেদেরকে নির্দোষ ভাবিবার বা প্রমান করিবার এক সহজাত প্রবৃত্তি বিরাজ করে আমাদিগের মাঝে। নির্দোষ থাকিয়া নিজেদেরকে নির্দোষ ভাবিবার মাঝে দোষের কিছুই নাই।

একদিকে নিজ-ঘটিত বা অপর-ঘটিত ইতিবাচক ঘটনাবলীর কৃতিত্ব বা অংশীদারিত্ব গ্রহনে আমরা যেমন উদগ্রীব হইয়া থাকি… অপরদিকে নিজ-ঘটিত বা অপর-ঘটিত নেতিবাচক ঘটনাবলী হইতে নিজেকে দ্রুতগতিতে বর্জন বা আড়াল করিবার চেষ্টায়ও রত হই।

নেতিবাচক ঘটনাবলীর সহিত কারণবশতঃ যদি সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকিয়া থাকে, তাহা হইলে নিজেকে আড়াল করিবার গতি বাড়িয়া যায় দ্বিগুণ বা এর চাইতেও বেশী… সবার দৌড়াইবার ক্ষমতা তো আর সমান নহে… আড়াল করিবার দ্রুততার সহিত দৌড়াইবার ক্ষমতার একটি সমানুপাতিক সম্পর্ক বিরাজমান…

নিজেকে আড়াল করিবার কার্যটি সফলতার সহিত সম্পন্ন করিবার পরই শুরু হইয়া যায় অপরকে দোষারোপ করিবার পর্বটি। নিজ সম্মান রক্ষার্থে “পরনিন্দায়” আরও ভালো অর্থে “কুৎসা রটনায়” মত্ত হইয়া উঠি।

পরনিন্দা পদ্ধতিটি প্রয়োগের মাধ্যমে এক ধরনের আত্মতুষ্টি লাভের চেষ্টায় রত হই। ভাবিয়া অবাক হই অপরের নিন্দা করিয়াই যদি নিজের সম্মান রক্ষা হয় তাহা হইলে তো সম্মানের সংগায়নে পরিবর্তন আনা আবশ্যক!

পরনিন্দা পৃথিবীতে একটি পুরাতন ধারনা হিসেবে বহুকাল ধরিয়া প্রচলিত রহিয়াছে… তাই ইহার বিরুদ্ধে লিখিতে গিয়া বোধ হইতেছে… এই বুঝি আমার নামেও শুরু হইয়া গেল আর কি…!

বিভিন্ন গবেষণায় ইহাই প্রতীয়মান হইয়াছে যে… অপরকে দোষারোপ করিবার মানসিকতা বেশী গড়িয়া ওঠে সাধারণত… অপরাধী, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং দুর্বলচিত্ত মানুষগুলোর মাঝে।

দুর্বলচিত্ত মানসিকতার মানুষগুলো নিজেদের দোষ স্বীকার করিবার অক্ষমতা আড়াল করিতে গিয়া পরনিন্দার আশ্রয় লইয়া থাকে।

সমাজে এই নেতিবাচক হাতিয়ারটি ব্যবহার করা খুবই সহজসাধ্য… ইহা সময় এবং ব্যয় সাশ্রয়ীও বটে।

আমরা বাঙ্গালীরা হইতেছি একটি আবেগপ্রবণ জাতি। আমাদিগকে খুশী করিবার জন্য যেমন খুব বেশী কাঠ খড় পোড়াইতে হয় না। ঠিক তেমনি কোন কিছু আমাদিগকে বিশ্বাস করাইতে হইলেও খুব বেশী সময়ের প্রয়োজন হয় না…

আমরা নগদে যাহা শুনি অনেকে তাহাই বিশ্বাস করিয়া থাকি।

অনেকে আবার এক কাঠি সরেস… ঠিক-বেঠিক যাহাই শুনি না কেন… শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজ উদ্যোগে তাহা অন্যের কান পর্যন্ত পৌঁছাইয়া দিবার গুরু দায়িত্বটিও কাঁধে তুলিয়া লই।

একান হইতে ওকান… চক্রে আবর্তিত হইতে হইতে উহা বিকৃত আকারে ছড়াইয়া পরে চারিদিকে ভাইরাসের মত। ইহা এমন একটি ভাইরাস যাহা দ্বারা আক্রান্ত হইতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না।

ভাইরাসটি ছড়াইতে “সন্দেহযুক্ত বিশ্বাস” নামক দুই শব্দের একটি বায়বীয় বস্তু প্রভাবক হিসেবে কাজ করিয়া থাকে।

এই পদ্ধতির আরও একটি সুবিধা হইলো ভাইরাস ছড়ানোর মূল হোতা পর্দার আড়ালে থাকিয়া খুব সহজেই সফলতার সহিত ভাইরাসটি ছড়াইয়া দিতে পারে।

পরনিন্দা করিয়া নিজের সম্মান রক্ষা করিবার এই মানসিকতা কি আদৌ কোন সুফল বহিয়া আনিতে পারে… নিন্দাকারীর জীবনে?

অন্যদিকে নিন্দিত মানুষটির কি ক্ষতি হইতেছে তাহা একবার ভাবিয়া দেখুন তো…!

তবে ইহাও সত্য এই নেতিবাচক হাতিয়ারটি ব্যবহার করা খুবই সহজসাধ্য হইলেও এই পদ্ধতিটি নিরাপদ নয়… এই পদ্ধতি ব্যবহারে ক্ষতির পরিমান পরিমাপ করাও দুঃসাধ্য… লাভের চাইতে অলাভই বেশী হইয়া থাকে…

এই ভাইরাসটি কখন কাহাকে আক্রমন করিবে তাহা বোঝা দুষ্কর…

মাহফুজুর রহমান সাহেবের প্রেমিক হৃদয় এই পরনিন্দা পদ্ধতিটির কুফল অনুধাবনে ব্যর্থ হইয়াছেন। হয়তো বাচালতাই ইহার মূল কারণ। শুনিয়াছি উনি ডক্টরেট ডিগ্রীধারীদের একজন।

গত ৩০ মে এটিএন চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান লন্ডনে গিয়া পরনিন্দার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হইয়া কিছু আউলা-ঝাউলা কথা বলিয়া ফেলিয়াছেন…

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকান্ডকে তিনি ‘পরকীয়ার বলি’ বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন… কান্ডটি উদ্ভট… কিন্তু বিষয়টি সরেস।

নিজের অপরাধ আড়াল করিতে লন্ডনে ভিন্ন আরেকটি অনুষ্ঠানে মাহফুজ বলিয়াছিলেন,

‘আরে, প্রাইম মিনিস্টার কতো না কথা বলেন। প্রাইম মিনিস্টারের বক্তৃতা শুনছেন না, ওইটাও বলছে, আমরা কি ড্রয়িংরুমে পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব নিছি? এইটা হচ্ছে, বেশি কথা বলতে বলতে বাচালের ফট করে একটা মিসটেক হয়ে যায় না, এ রকম একটা মিসটেক হয়ে গেছে।”

উনার কথাগুলো শুনিয়া বোধ হইতেছে উনি একজন ডক্টরেট ডিগ্রীধারী গবেট…!

এই গবেট কে নিয়া দেশে তোলপাড় শুরু হইয়াছে…

অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করিতেছি…

কি হয়… কি হয়… কি জানি কি হয়…!


প্রকাশকালঃ ২৮ জুন ২০১২

ছাতা

ওহ...!
বৃষ্টি আসিয়াছে... !
ছাতা নিয়াছো সাথে,
ভিজিয়া যাইবে তাই...!
বৃষ্টিতে ভিজিবার,
শখটি তোমার,
উবিয়া গিয়াছে কোথায়?

বৃষ্টি হইলেই, ভিজিতাম আমরা,
ভুলিয়া গিয়াছো আজ...
বৃষ্টি আসিলে ছাতাই সঙ্গি,
আমাকে দিয়ে হয় না কাজ...

অযোগ্য আমি,
হার মানিয়াছি,
ছাতার কাছে হায়।
তাই তো সে তোমার,
মাথায় উঠিয়া,
আমাকে চোখ রাঙ্গায়।।



প্রকাশকালঃ ৩০ জুন ২০১২

ক্ষমা

মহৎ অতি, ক্ষমা গুণটি,
ব্যবহারে কৃপণতা শুধু।
যুদ্ধে “ক্ষমা” হারিয়া গিয়াছে,
“শাস্তি”র কাছে প্রভু।

করোনি তুমি, ক্ষমা যে আমার,
পূর্ব-পুরুষেরে,
চিহ্ন তাহার, বহন করিয়া,
জন্মিয়াছি মাতৃক্রোড়ে।

প্রকৃতি আমায়, দিয়াছে শাস্তি,
নষ্ট করার পাপে,
ক্ষমা ভুলিয়া, আঘাত করিতেছে,
উন্মত্ত বিধবংসী রূপে।

শোষকের দ্বারা, শোষনের স্বীকার,
আমার মতো শোষিতেরা,
প্রতিবাদ করিলে, শাস্তির খর্গ,
নামিয়া আসে যে খাড়া।

ধর্মের জন্য, মানুষ নহে,
মানুষের জন্য ধর্ম হবে,
বুঝিয়াও তাহা, ধর্মের নামে,
যুদ্ধ চলিতেছে ভবে।

ক্ষমার বাণী, নিভৃতে কাঁদে,
ইহজগতে শান্তি নাই।
পরজগতেও, শাস্তির বিধান,
পাপ-পূণ্যের হিসেবে পাই।

ক্ষমো প্রভু মোর, পাপ-তাপ সব,
স্বর্গে দিও ঠাঁই।
শাস্তির ভারে, ক্লান্ত যে আমি,
নরক নাহি চাই।



প্রকাশকালঃ ২৯ জুন ২০১২

চেয়ারম্যান এর সামনে বিবেক নত

সাংবাদিক দম্পতি মেহেরুন রুনি ও সাগর সরওয়ারের হত্যায় এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানকে দায়ী করে যে তোলপাড় শুরু হয়েছে সে ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এই পোষ্টটি লেখার প্রয়াস পেয়েছি।

মানুষ যখন স্বার্থপরতা এবং অনৈতিকতায় নিজেকে ভাসিয়ে নিজ মনুষ্যত্ব বিকিয়ে দেয়, তখন যে কোন অমানবিক কাজে তার গ্লানি বোধ পঙ্গু হয়ে যায়...

ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার পিছনের চরম সত্য জেনেও সম্মানহানীর আশংকায় নিশ্চুপ থাকার বা মিথ্যার আঘাতে সত্যকে ধবংসের চেষ্টা করার বদ অভ্যাস আমাদের মাঝে বিরাজমান।

আশেপাশে দৃষ্টিপাত করলেই এর যথার্থতা প্রতীয়মান হয়...

এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দাবি করার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের মাঝে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়ে গেছে।

ফলশ্রুতিতে চার সংগঠন থেকে ৯ সাংবাদিককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে শিল্পীদের দিয়ে সাংবাদিক নেতাদের বিরুদ্ধে মাহফুজুর রহমান তার টেলিভিশনে কথা বলিয়েছেন।

মাহফুজুর রহমান সাংবাদিক দম্পতি হত্যার নেপথ্যে ছিলেন কিনা তা প্রমাণিত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু তা সঠিকভাবে না জানলেও...

ইহা সত্য... যে কদাচরণের জন্য সাধারণ মানুষেরা শাস্তি পায়... সেই একই ধরনের কদাচরণে ক্ষমতাবানেরা যখন দুষ্ট হয় তখন...

সবার চোখে ধুলা দিয়ে কদাচরণ গুলো আড়াল করতে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে সম্মান রক্ষার একটি চেষ্টা প্রায়শঃই চক্ষুগোচর হয়ে থাকে...

সত্য আড়াল করে আপাতঃ ফল লাভ হয় সত্য... কিন্তু ইহাতে লাভের চেয়ে অলাভই বেশী।

আমি আঘাতপ্রাপ্ত হই যখন দেখি... সম্পর্কের আপনতার কারণে... উন্মত্ত কদাচারীর কদাচরণের কাছে মাথা নত করে তার ইচ্ছা পূরণে... সমাজের বিবেক বলে পরিচিত মানুষদের নিজস্বতা বিসর্জন দিতে...

যা প্রকৃতপক্ষে কদাচারীর কদাচরণের পথকেই কুসুমাস্তীর্ণ করে...



প্রকাশকালঃ ২৫ জুন ২০১২

ছায়া

সম্মুখে, পশ্চাতে
অথবা কোন এক পার্শ্বে
ভারহীন, নিস্তব্ধ
চলেছো তুমি...
উত্থান আর পতনে।
দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ-বেদনা
অনুসরণ আর অনুকরণে।
সসীম মন খুঁজেছে তোমায়
উর্ধ্ব পানে
অসীম শূণ্যতায়... জোৎস্না স্নাত রাতে...
ভাবেনি সে
রয়েছো তুমি
অনেক কাছে,
ধূসর ছবি হয়ে
আমারই পাশে...
মন মন্দিরে আসন পেতে...



প্রকাশকালঃ ২৩ জুন ২০১২

সবুজ রং মিশ্রিত অর্থনীতি


ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো শহরে ২০ বছর পর বিশ্ব রক্ষা কর্তারা বিশ্বসভায় বসিয়াছেন।

আলোচনা, তর্কবিতর্ক, ঝগড়া বা বিবাদ—সবই চলিতেছে সমান তালে।

ধনী দেশগুলো চাহিতেছে সবুজ অর্থনীতি, আর দরিদ্র দেশগুলো চাহিতেছে দারিদ্র্য বিমোচন।

ধনী দেশগুলো জানাইয়া দিয়াছে...তাহাদের অর্থনৈতিক সংকট চলিতেছে... এই হেতু দারিদ্র বিমোচনে দান-খয়রাত করিবার মতো কোন অর্থ তাহাদের নাই। তবে সবুজ অর্থনীতিতে টাকা ঢালিতে হইলে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া যাইতে পারে...

এতোদিন ধরিয়া “দারিদ্র বিমোচন” বলিয়া গলা শুকাইলো যাহারা... তাহারাই আজ বলিতেছে “দারিদ্র বিমোচন” এখন আর কোন গুরুত্বপূর্ন বিষয় নহে...

রিও ডি জেনিরোতে ১৯৯২ সালে ১১০টি দেশের নেতারা বসিয়া বিশ্বকে বাসযোগ্য করিবার অভিপ্রায়ে “সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা” নির্ধারণ করিয়াছিলেন...

একমতও হইয়াছিলেন। ধনী দেশগুলো তাহাদের জিডিপির ১ শতাংশ দরিদ্র দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যয় করিবেন—এমন প্রতিশ্রুতিও দিয়াছিলেন।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, ধনী দেশ গুলো তাহাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে নাই... দরিদ্র দেশগুলো প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সহায়তা হইতে বঞ্চিত হইয়াছে।

এখন অনেকে আবার গলা ফাটাইয়া বলিতেছে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য নির্ধারণ, টেকসই উন্নয়ন—এ সবই ছিল লোক দেখানো বিষয়।

অর্থ আয়ের কৌশল গুলো আমার কাছে জলবৎতরলং হইলেও... অর্থনীতির অর্থ আমার কাছে তেমন বোধগম্য নয়। তাই এই বিষয়ে লিখিতে গিয়া আমার তেমন কোন রসবোধও জাগে না...

অর্থনীতির অর্থ দুর্বোধ্য ঠেকিলেও... “দারিদ্র বিমোচন” শব্দ-দ্বয়ের মর্মার্থ উপলব্ধি করিতে কোন বেগ পাইতে হয় না।

দরিদ্র দেশ গুলোর দারিদ্র বিমোচনের কথা উঠিতেই ধনী দেশ গুলো অর্থসংকটের ধুয়া তুলিয়া নিজেদের দারিদ্রতাকে সামনে তুলিয়া ধরিতেছে... অথচ... তাহাদের যুদ্ধ-বিগ্রহ করিবার অভিপ্রায়ে কোন ধরনের ভাটা পরিলক্ষিত হইতেছে না।
আফগানিস্তান, ইরাক, এখন আবার ইরান... তালিকাটি দিন দিন দীর্ঘ হইতে দীর্ঘতর হইতেছে।

যুগে যুগে ইহাই চলিয়া আসিতেছে...ধনীরা যাহা বলিবে আমাদিগকে তাহাই করিতে হইবে... তাহারা যাহা বলিবে তাহাই সঠিক... মানিয়া লইতেই হইবে...

কিন্তু ভিতরের সত্য এই যে, উহারা নিজেদের স্বার্থকে সার্থক করিতে... উপযাচক হইয়া যেমন যুদ্ধ বাধাইয়া থাকে... তেমনি নিজেদের ধ্যান ধারণা গুলো দরিদ্র দেশ গুলোর উপর চাপাইয়া দিতে বিভিন্ন ধরনের কুটকৌশল অবলম্বন করিয়া থাকে... নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করাই যে উহাদের স্বভাব...

তাইতো ‘সবুজ অর্থনীতি’র নামে শৌখিন ও ব্যয়বহুল উন্নয়নের ধারণা দরিদ্র দেশগুলোর ওপর চাপানোর চেষ্টা চলিতেছে।

ইহার পিছনের স্বার্থ কি?

উন্নত দেশগুলো তাহাদের চলমান মন্দা কাটাইয়া উঠিতে দরিদ্র দেশগুলোর ওপর ‘সবুজ অর্থনীতি’ নামক নতুন বাণিজ্য ব্যবস্থা চাপাইয়া দেওয়ার চেষ্টা করিতেছে। ধনীদের জীবনমান রক্ষা, মুনাফার ও লোভের গায়ে সবুজ রং লাগাইয়া চোখে ধুলা দেবার চেষ্টা চলিতেছে।

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাইয়াছে, বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়িয়া গিয়াছে, বাতাসে কার্বনের পরিমাণ বাড়িয়া যাইতেছে। পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সচেতনতা অনস্বীকার্য।

কাউকে মাথায় কাঁঠাল ভাঙ্গিয়া খাইবার সুযোগ না দিয়া এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের সরকারগুলোর সুপরিকল্পনা থাকা উচিত বলিয়া প্রতিভাত হইতেছে।



প্রকাশকালঃ ২১ জুন ২০১২

দেশ

সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা
ছোট্ট একটি দেশ,
ভয়ংকর তেজে, অন্ধকারে
এগিয়ে চলিতেছে বেশ...!

শিক্ষালয় সব বন্ধ হইয়া যায়,
নেতাদের তাহাতে কিবা আসে যায়?
পোলাপান সব বৈদেশে পড়ায়,
আত্মসুখে বগল বাজায়।

পেটোয়া বাহিনী শুধুই পিটায়,
গন্ডার মন্ত্রীর শুভেচ্ছা পায়।
নারী-পুরুষ সব পড়িয়া মার খায়,
কথা বলিলেই গুম হইয়া যায়।

সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা,
ছোট্ট একটি দেশ,
চুষিয়া খাইতেছে দুই ডাইনী,
ল্যাংটা পাগলারা বেশ।

শূণ্য পূর্ণ অনুভূতি

চারিদিকে সবাই উন্নতি করছে, সাফল্য পাচ্ছে... নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে। ভাবতে ভালো লাগে, কারণ সঠিক পথে কেউ উন্নতি করলে বা সাফল্য লাভ করলে কার না ভালো লাগে। আর তাছাড়া এরা সবাই তো আমার কাছের মানুষ... আত্মীয়-স্বজন... গর্বে বুক ভরে ওঠে।

অনেক ক্ষেত্রে আত্মীয় না হলেও... দূরের কেউ হলেও... তাদের সাফল্য দেখে কাছের মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাদের উচ্চতার উপর ভর করে নিজেদের উচ্চতা বাড়িয়ে নিতে সবসময় উদগ্রীব হয়ে থাকি।

আমি নিজেও সাফল্য লাভের আশায় রাতদিন ছুটে চলেছি। সাফল্য ধরাও দিচ্ছে একের পর এক। সামাজিক মর্যাদা, অর্থ-বিত্ত, গাড়ি-বাড়ি, সুন্দর সাজানো সংসার... বস্তুগত সাফল্য লাভ বলতে যা বোঝায় তার মোটামুটি সবই পেয়েছি...

আজকাল অনেককেই দেখি আগ বাড়িয়ে কথা বলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করতে...
আসে... বিভিন্ন সভা-সমিতিতে বিশেষ অতিথির পদ অলংকরণের নিমন্ত্রন...

অনেকে আবার আমাকে দেখলেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়... অনেকে আবার বসতেও দেয়... অভ্যাসবশঃত বড়দের দেখলেই তাদের সম্মানার্থে যা করে থাকি আমরা।

কিন্তু যখন দেখি আমার চেয়ে দ্বিগুন বয়সের মানুষগুলোকে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে... নিজের ঘাড়ের গামছা দিয়ে সযত্নে চেয়ারটি মুছে আমাকে বসতে দিতে... প্রশ্ন জাগে... এর অর্থ কি? এটা তো অভ্যাসবশঃত নয়?

এই জীবনে লেখাপড়া আর অর্থ আয় করা ছাড়া এমন তো কোন মঙ্গলজনক কাজ করি নি, যা এত সম্মান বয়ে আনতে পারে আমার জন্য।

তাহলে এই সম্মান দেখানো কেন?

আমার অর্থ-বিত্তের জোর? ক্ষমতার জোর?

যদি তাই হয়... তাহলে এর অর্থ হচ্ছে... তারা তো আমাকে সম্মান করছে না... করছে আমার অর্থ-বিত্ত আর আমার ক্ষমতাকে।

আর যে ক্ষমতার বড়াই করছি সেটাও তো ঐ চেয়ারের বদৌলতে।

যে গরীব মানুষগুলোর দুঃখ দুর্দশার কথা বলে ছবি দেখিয়ে... দাতাদের কাছ থেকে প্রচুর অঙ্কের অর্থ নিয়ে আসছি...

সেই গরীব মানুষগুলোই তাদের এলাকায় আমার পদার্পণ উপলক্ষে... আমি কিসে খুশী হবো... কিসে না হবো... কি খাব... কি না খাব... কোথায় থাকবো... এই
চিন্তাতে সবাই ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে...

অফিসের বড় কর্তা বলে কথা... পাছে কর্তা বেজাড় হয়ে গেলে অর্থ সাহায্য বন্ধ করে দেয়...

তারা একবারও ভাবে না... এই আমি যার জন্য তারা এতো ব্যতিব্যস্ত... সত্যিকার অর্থে আমার দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানো... শান শওকতের জীবন যাপন সবই তাদের বদৌলতে।

আজ যদি তারা গরীব না হতো... তাদের জন্য অর্থ সাহায্য না আসতো... আমার অর্থ-বিত্ত, গাড়ি-বাড়ি কিছুই হতো না।

দয়াপরবশ হয়ে অর্থ দিচ্ছে একজন... আরেকজনকে... আর মাঝখানে মজা লুটছি আমি।

এই ক্ষেত্রে আমার কাজটি তো অনেকটা বাজারের “মিন্তি”-র মত। অর্থ নিয়ে ঐ গরীব মানুষগুলোকে পৌঁছে দেয়া। এর বিনিময়ে মাসিক বেতন হিসেবে কিছু অর্থ পাওয়া।

টাকা বহন করা ছাড়া তো আর কিছুই নয়।

‘মিন্তি’ শব্দটা হয়তো অনেকের কাছেই অপরিচিত। ঢাকার বড় বড় বাজারে মিন্তিদের দেখা পাওয়া যায়। ছোট ছোট কোমলমতি শিশুরা ঝাঁকা নিয়ে বসে থাকে। গাড়ির হর্ন বাজাতেই ওরা সচকিত হয়ে ওঠে। তারপর ঝাঁকা মাথায় করে ভোঁ দৌড়। সোজা সাহেব বা সাহেবার কাছে। বিনীত আবেদন ‘মিন্তি’ লাগবে স্যার। সাহেবের বাজার টানা বাবদ কিছু পায় শিশু ‘মিন্তি’।

কিন্তু এই বহন করা বাবদ আমি যা পাই তা তো অনেক! যাদের জন্য এই অর্থ তারা তো আমার তুলনায় কানাকড়িও পায় না।

আমার যে সম্পদ... সবই তো আসলে ঐ গরীব মানুষগুলোর অর্থ থেকে নেয়া... ওদের নামে অর্থ এনে বেশীর ভাগ অংশই বিভিন্ন খাতে হিসেবের মারপ্যাঁচ দেখিয়ে নিজের কাছে রেখে দেয়া...

যাদের দুঃখ দুর্দশাকে পুঁজি করে আজ আমার এই অর্থ-বিত্ত, প্রতিপত্তি... সেই গরীব মানুষগুলোকেই আত্মীয় বা খুব কাছের বলে পরিচয় দিতে গিয়েও আজকাল দ্বিধান্বিত হয়ে পরি... ক্ষেত্রবিশেষে না চেনার ভান করি... পাছে অন্যদের সামনে নিজের উচ্চতা নেমে যায়...

মাঝে মাঝে শূণ্য পূর্ণ অনুভূত হয়...

যে গরীব মানুষগুলোর রস শুষে আজ আমার এই অবস্থানে আসা তাদের সঙ্গেই আজ সম্পর্ক ছিন্ন...

এত অর্থের মাঝেও আজ আমার জীবন অর্থহীন... ক্ষমতা হয়ে দাঁড়িয়েছে গলার কাঁটা...

আজকাল সব কিছুই কেমন যেন উল্টা-পাল্টা লাগে... অনেকটা পাগলা পাগলা...

একটুস ভেবে দেখবেন কি...!

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের মধ্যে দাঙ্গার পর কয়েক দিন ধরে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্টগার্ড তত্পর রয়েছে।

জানা যায়, একজন বৌদ্ধ নারীকে ধর্ষণের ঘটনার জের ধরে বার্মার রাখাইন প্রদেশে বৌদ্ধ-মুসলমানদের মাঝে এই দাঙ্গার সূত্রপাত।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

তবে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থী ঢুকতে দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে আসছে বাংলাদেশ।

নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দানের পক্ষে-বিপক্ষে প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে।

একদিকে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ প্রদান... অন্যদিকে বাংলাদেশে সরকারের আশ্রয় প্রদানের বিপক্ষতা করে নানা ধরণের বিবৃতি... মিডিয়াও বসে নেই... প্রতিদিনই তাদের ক্যামেরায় তুলে আনছে শরণার্থীদের করুন
জীবনকাহিনী...

এই বিষয়টি নিয়ে কোন ধরনের তর্ক বিতর্কে অবতীর্ন হওয়ার অভিপ্রায় আমার নেই।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে আমার একটি অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করার জন্য আজ এই লেখাটি লিখতে বসেছি।

জাতিসংঘে চাকুরি করার সুবাদে আমি সরেজমিনে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনের সুযোগ পেয়েছিলাম।

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মূলতঃ দু'দফায় বাংলাদেশে এসেছিলেন – একবার ১৯৭৮ সালে; আরেকবার ১৯৯২-৯৩ সালে।

সরকারী হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে, দুটি ক্যাম্পে – একটি টেকনাফের নয়াপাড়ায় এবং আরেকটি উখিয়ার কুতুপালংয়ে- প্রায় ২৮,০০০ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে।

যদিও আন্তর্জাতিক সংস্থা UNHCR এর হিসাব অনুযায়ী এই সংখ্যা ৩১,০০০ এর কিছু উপরে। বাংলাদেশে সংখ্যা নিয়ে গোলমাল নতুন কিছু নয়।

২৮,০০০ বা ৩১,০০০ যাই হোক না কেন... এই নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীর বাইরে আরও প্রচুর “অনিবন্ধিত” রোহিঙ্গা শরণার্থীর বসবাস রয়েছে ঐ এলাকায়।

তাদের সঠিক সংখ্যা অদ্যাবধি নিরূপন করা হয় নি। তবে এদের সংখা তিন থেকে পাঁচ লাখ পর্যন্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

মিয়ানমার হতে আগত ক্যাম্পে অবস্থানকারী নিবন্ধিত শরণার্থীরা সাহায্যদাতাদের আশীর্বাদে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে...

পাশাপাশি ঐ এলাকায় বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে।

সাহায্যদাতারা রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে নিবন্ধিত শরণার্থীদের জন্য সাহায্য ঢেলে দিলেও... আশে পাশের অনিবন্ধিত শরণার্থীদের সাহাযার্থে কিছুই করতে পারছে না।

সরকারের অনাগ্রহই এর জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হয়।

নতুন করে শরণার্থীদের আশ্রয় দানের ব্যাপারে দ্বিমত থাকলেও যেসব রোহিঙ্গা শরণার্থী ইতোমধ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করে দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছে তাদেরকে নিবন্ধিত করে প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য সরকারকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

৫৫০ শব্দের মধ্য ফেইসবুক নিয়ে একটি রচনা লিখ... (পূর্নমান-২০)

ফেইসবুক

সূচনাঃ


ফেইসবুক বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, ইহা ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি ৪ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। ইহার মালিক হইলো ফেইসবুক ইনক। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম হইতে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হইয়াছে।

মার্ক জাকারবার্গ হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন তাহার কক্ষনিবাসী ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র এডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিত্‌স এবং ক্রিস হিউজেসের যৌথ প্রচেষ্টায় ফেইসবুক নির্মাণ করিয়াছেন।

বর্ণনাঃ

ফেইসবুকে একটি বন্ধু সংযোজন অংশ, একটি বার্তা প্রেরণ অংশ, ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করিবার জন্য কিছু অংশ, ছবির সংগ্রহ রাখিবার অংশ, একটি ওয়াল... ইহাছাড়াও আরও অনেকগুলো অংশ রহিয়াছে।

৫৫০ শব্দের সীমাবদ্ধতা মাথায় রাখিয়া সবগুলো অংশ বর্ণনা করা সম্ভব নহে। তাই শুধমাত্র ফেইসবুকের ওয়াল সম্পর্কে বর্ণনা করিলাম।

ফেইসবুক ওয়ালে যাহার যাহা ইচ্ছা শালীনতা বজায় রাখিয়া পোষ্ট করিতে পারে।

ফেইসবুক ওয়ালে সাধারণত কি কি ধরণের তথ্য থাকে তাহার একটি নমুনা জনৈক ফেইসবুক ব্যবহারকারীর ফেইসবুক ওয়াল হইতে উদাহরণস্বরূপ তুলিয়া ধরা হইল...

লিজা মুন জানাইয়াছে... ভাল থাকিবার সবচেয়ে ভাল ঔষধির সন্ধান। এঞ্জেলা বিশ্বাস... জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যস্ত... রীটা আবার এই উদ্যোগটিকে পছন্দ করিয়াছে।

অর্চিতা... পৃথিবীর সমস্ত সমস্যা নিয়া চিন্তিত রহিয়াছে।

লিন্ডা... শিশু লীগের খোঁজ খবর দিয়াছে। এঞ্জেলা হালদার... গৃহকর্মী খুঁজিয়া বেড়াইতেছে।

লিন্ডা মেরী সরকার... রূপক অর্থে “কালো বানর” ব্যবহার বুঝাইতেছে। জুলিয়েট মালাকার... কি এক অজানা ঝড় চলিয়া যাওয়াতে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাইয়াছে।

জেনিফা... গাউন পরিয়া গাছে আরোহন করিয়াছে... উহা দেখিয়া আর এক বন্ধু গাছে আরোহন করিবার কৌশলটি শিখিতে চাহিতেছে। রিচার্ড... গ্রামীন পরিবেশে বিনে পয়সায় গান শোনাইতেছে।

রাসেল... লাজুক হাসির প্রোফাইল ছবি পোষ্ট করিয়াছে। খ্রীষ্টফার... রেবেকাকে... তাহার বাসায় নিমন্ত্রন জানাইতেছে। দেবোড়া জুঁই... আমেরিকা পরিদর্শনের
হালনাগাদ তথ্য প্রদান করিয়া যাইতেছে।

জাসিয়ানা ক্যাডেট... বাড়ি ফিরিবার জন্য পাগল হইয়া উঠিয়াছে। গ্লোরিয়া... নিজের নামের সাথে “জস” শব্দটি যুক্ত করিয়াছে।

বিড়াল পাগল... এমি... বাংলাদেশের মানুষের নৈতিক বিশ্বাসের জরিপ নিয়ে ব্যস্ত রহিয়াছে। এনড্রু... ধুলা, বালি আর নিজের মাঝে যোগসূত্র খুঁজিয়া ফিরিতেছে... ইংরেজী এবং বাংলা উভয় পদ্ধতিতে।

মিরিয়াম কেয়া... পেরেশানিতে ভুগিতেছে। কাজল দা... ধৈর্য সহকারে প্রতিদিন বাইবেল থেকে বিশেষ বিশেষ পদ উল্লেখ করিয়া যাইতেছে। জুলিয়েট রসেটি... জীবন্ত থ্রি ডি টেলিভিশন দেখিতেছে।

এদিকে জয়েস... সন্তানকে নিয়ে বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলিয়া পোষ্ট করিয়াছে। দানিয়েল সাহেব...কানাডাতে বসিয়া প্রতিদিন চাকরি দিয়া যাইতেছে। ছবি-প্রেমী এমিলী... কিছু ভালো ছবির পোষ্ট দিয়াছে।

কুড়ি চিসিম... বাচ্চার পরিহিত জুতা দেখিয়া “কিউট” বলিয়াছে।

তাসমিনা...ইউরোপ কে ভুলিতে পারিতেছে না। বীণার... ট্রেনিং চলিতেছে পুরোদমে।

এদিকে আবার মেঘ বালিকা... দুঃখে আক্রান্ত হইয়াছে। তিথী... কাপড় ডিজাইন করিতেছে। লীনা... উপদেশ দিয়া যাইতেছে...

একজন বয়ষ্ক বন্ধু... খালি গায়ে বাসায় বসিয়া কাঁঠাল চিবাইতেছে...

উপকারিতাঃ

ফেইসবুক উন্মুক্ত... ইহাতে নিখরচায় সদস্য হওয়া যাইতেছে।

পুরানো বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করা যাইতেছে।

খালাতো/মামাতো/ফুফাতো/চাচাতো/তালতো/…..বোনের/ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলে... ফেইসবুকের মাধ্যমে সহজেই যোগাযোগ করিবার উপায় রহিয়াছে।

ইহাছাড়াও ফেসবুকের আরও অনেক উপকারিতা রহিয়াছে...

অপকারিতাঃ

ফেইসবুক উন্মুক্ত হওয়াতে... ইহা ব্যবহার করিতে গিয়া অনেকেই উন্মত্ত হইয়া উঠিতেছে।

ফেইসবুক ব্যবহার অনেকের নেশায় পরিণত হইতেছে। ফেইসবুক অনেক সময় অপচয় করিতেছে।

অনেকে ছদ্ম নাম ব্যবহার করিয়া... অন্যদেরকে বিশেষ করিয়া মেয়েদেরকে উত্যক্ত করিতেছে... ইহাতে অনেকে আত্মহত্যার পথও বাছিয়া লইতেছে।

ফেইসবুক পারিবারিক বন্ধন শিথীল ও বিবাহ বিচ্ছেদেও বড় ভূমিকা রাখিয়া চলিয়াছে।

অনেকে আবার ফেইসবুককে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের হাতিয়ার হিসাবেও ব্যবহার করিতেছে।

সিরিয়া, চায়না এবং ইরান সহ বেশ কয়েকটি দেশে ফেইসবুক ব্যবহার আংশিকভাবে কার্যকর রহিয়াছে। ইহার ব্যবহার সময় অপচয় ব্যাখ্যা দিয়ে কর্মচারীদের নিরুৎসাহিত করিয়া তাহা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হইয়াছে...

ফেইসবুক ব্যবহারের আরও অনেক অপকারী দিক রহিয়াছে...

উপসংহারঃ

পরিশেষে বলা যায়... যখন ফেসবুক উপকারে আসে তখন ইহা ভালো... আর যখন অপকার করে তখন ইহা খারাপ...

আরও অনেক বিষয় লিখিবার প্রয়াস পাইয়াছিলাম। কিন্তু লিখিতে গিয়া ৫৫০ শব্দের সীমা অতিক্রান্ত হইয়া যাইতে পারে এই ভয়ে আমার লেখনি বারবার বাধাপ্রাপ্ত হইয়াছে।

একটি ক্লিক...একটি স্বপ্ন... একটি চিঠি

...,

আজ... অনেক কথা বলেছো... গল্প করেছো... গজ-দন্ত বের করে ভুবন ভোলানো হাসি হেসেছো...

তুমি... তোমার বর... আমার স্ত্রী...আর এই আমি... সবাই মিলে তোমার বাসায় আড্ডা দিচ্ছিলাম... হঠাৎই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল... বুঝলাম স্বপ্নে এসেছিলে তুমি...

কেমন আছ তুমি?

তোমার সাথে আমার সম্পর্কটি বেশ মজার। আমার জীবনের আদর্শ হিসেবে জীবিত বা মৃত যারা রয়েছেন তাদের মাঝে তুমি একজন!

গ্রীণ রোডের ভোজন বিলাসে চা খেতে খেতে তোমার সাথে আমার প্রথম সরাসরি কথা হয়েছিল। তুমি চা খেয়েছিলে কিনা সঠিক মনে করতে পারছি না... এই মুহূর্তে...! তুমি এসেছিলে আমার নাদুস-নুদুস (!) চির শত্রুটির সাথে।

অনেকের মাঝে... তুমি ছিলে ছোটখাটো গঠনের...! কিন্তু এক অসাধারণ ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ছিল তোমার মাঝে... সময়ের পরিক্রমায় যা আজ পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। স্বমহিমায় উদ্ভাসিত ছিলে তুমি। শব্দমালার মুদ্রাদোষে তোমার মুখে পুনরুচ্চারিত "so what..." শব্দ দুটো এখনও আমার কানে বাজে।

এরপর তোমার সাথে আমার হাতেগোনা কয়েকবার মাত্র দেখা হয়েছে।

মাঝে মাঝে ঐ ছোট ছেলেটির (!) সাথে... এখন সে তোমার "বর"।

এরপর আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠানে তোমাকে দেখেছিলাম... তুমি ছিলে আমাদের খুব কাছাকাছি...। একদিন তোমার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম পরিবার নিয়ে। ওহ! তোমার বিয়ের অনুষ্ঠানেও আমি গিয়েছিলাম। কিন্তু তেমন কথা হয় নি তোমার সাথে। এই হচ্ছে তোমার আমার দেখা সাক্ষাতের ছোটখাটো ইতিহাস।

তুমি আমাদের পরিবারে বিশেষ একটি স্থান দখল করেছিলে... এখনো আছো। আমার কন্যাটির সাথে স্বল্প সময়ের কথোপকথনে প্রায়ই উঠে আসে তোমার কথা।...

তোমার দৈনন্দিন ব্যস্ততার মাঝে এই লেখাটি পড়ার সুযোগ পাবে কি না জানি না। পড়লে হয়তো অবাক হবে...! কোনদিন তোমাকে বলা হয় নি এভাবে...

এই তো কিছুদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে সাহায্যের আশায়... আমি খুঁজেছিলাম... তোমাকে আর তোমার বরকে...

তোমার কঠিন সময় গুলোতে তোমার পাশে দাঁড়াইনি আমরা। শুধু নিজের স্বার্থে যখন তোমাকে প্রয়োজন তখন খুঁজেছি। কোন প্রশ্ন না করে নীরবে তোমার সাধ্যমত সাহায্য করে গিয়েছ আমার পরিবারকে... এখনো করছো। কি স্বার্থপর আমরা...!

তোমাকে দেখে আমি শিখেছি... কি ভাবে হাসিমুখে কঠিন সময় পার করতে হয়... নিজের লক্ষ্য ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হয়... কি ভাবে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হয়... কিভাবে মা বাবার সেবা করতে হয়...

সর্বোপরি আমাদের অন্ধ বিশ্বাসকে তুমি আর তোমার "বর" ভুল প্রমাণ করে দিয়েছো... আমরা সবাই যখন মিথ্যার আঘাতে সত্য কে ধবংস করবার খেলায় মত্ত... তখন তোমরা দু'জন আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছো... সম্পর্ক ধুলিস্যাত হয়ে গেলেও তা কিভাবে আবার গড়ে তুলতে হয়... নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার পরও কি ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়... ক্ষমা করতে হয়... বিশ্বাস করতে হয়... পুনরায় সুখের রাজ্য গড়ে তুলতে হয়...

আমি গর্ববোধ করি আমার এই ছোট্ট জীবনে তোমার সাথে পরিচিত হতে পেরেছি বলে। আমার নাদুস-নুদুস চির শত্রুটিকেও ধন্যবাদ... তোমার মত অসাধারণ একজন মানুষকে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল বলে।

পরিশেষে একটি অনুরোধ... "কথার কদর্থে কাউকে কদর্য ভেবো না..." (?)

তুমি, তোমার বর... ছোট্ট শিশুটিকে নিয়ে সুস্থ, সুন্দর থাক...

...
...
...

হঠাৎ আমার ফেসবুক ওয়াল এ তোমার পদচিহ্ন দেখে... তোমাকে মনে পড়া... তারপর স্বপ্ন দেখা এবং এই চিঠিটি লেখা...

মুখোশ (২য় পাঠ)

প্রয়াত পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসন বলতেন... তাঁর শৈশব বলে কিছু ছিল না। এই বয়সে সবাই যখন খেলাধুলা নিয়ে মেতে থাকত, তিনি তখন গান নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন স্টুডিওতে।

তাই তার সন্তানদের স্বাভাবিক শৈশব নিশ্চিত করতে তিনি তাদের মুখোশ পরাতেন। কারণ, তিনি চাইতেন, বাইরের কেউ যেন তাদের চিনতে না পারে। তাঁর মতো ব্যস্ত ও খ্যাতির বিড়ম্বনার জীবন নয়, সন্তানদের স্বাভাবিক শৈশব চেয়েছিলেন তিনি।

ইতিবাচক বা নেতিবাচক যাই বলি না কেন... বিভিন্ন কারণে মানুষ নিজেদেরকে মুখোশে আড়াল করে রাখে...

অনেককে দেখি পরিবারে শান্তি টিকিয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত মুখোশ পরে জীবন যাপন করতে...

বহু পুরুষকে দেখি রাজা রামমোহন রায়ের মুখোশ পরে নারীর ক্ষমতায়নে রাস্তায় নারী আন্দোলনে বড় বড় বক্তৃতা দিতে... আবার তাকেই দেখি... ক্ষমতার বলে বলীয়ান হয়ে নরপশু হিসাবে। তাদের বোধে ধরা দেয় না, নারীও একজন মানুষ।

সভা ও সেমিনারে বহু নেতা-নেত্রীকে দেখি শিশুদের অধিকারের দাবিতে গলা ফাটাতে, বাসায় ফিরে তাদেরকেই আবার দেখি ঘরের ছোট্ট গৃহকর্মীটিকে নির্যাতন করতে!

উন্মুক্ত মানসিকতার মুখোশে হাওয়ায় ভাসতে থাকা অনেক নারী-পুরুষকে দেখি ক্ষমতার অপব্যবহার করতে। স্বার্থান্ধ এই মানুষগুলো ভেবেও দেখতে চায় না যে, ভালো ও মন্দের সহবস্থান সকল সমাজে, সবখানেই আছে। এদের বোধগম্য নয়... উন্মুক্ত মানসিকতা মানেই উন্মত্ত মানসিকতা বা স্বেচ্ছাচারীতা নয়!

ধর্মপ্রাণ মুখোশের আড়ালে দেখি কুৎসিত চেহারা...

দেখি, রাজনৈতিক দলের সমর্থনপুষ্ট হওয়াতে শ্রমিক না হয়েও শ্রমিক নেতা বনে যেতে... শ্রমিকদের স্বার্থ না ভেবে আপন আখের গুছাতে...

নিজেকে আদর্শবাদী প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে অনেককেই দেখি... অনৈতিকতা বা বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক থাকার দায়ে স্বল্প বেতনের কর্মচারীটিকে চাকুরিচ্যুত করিতে... সেই একই ধরনের দুষ্টতাকে নিজের বা আপনজনের ক্ষেত্রে উন্মুক্ত মানসিকতার ফসল বলে আত্মসুখ লাভ করতে।

দেখি, মানবপ্রেমী উন্মুক্ত মানসিকতার দাবীদার মানুষগুলোকে মানব বিরোধী অনৈতিক কার্যকলাপে মত্ত থাকতে...

দেখি, সমাজে আদর্শবান অনৈতিক কার্যাবলীর বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর বলে পরিচিত মানুষগুলোকে নিজের সন্তানের অবৈধ-অনৈতিক কার্যাবলী মেনে নিতে বা পর্দার আড়াল থেকে তাদের অবৈধ কাজে মদদ দিতে।

দেখি, অধিকার সচেতন মানুষগুলোর অপরের অধিকার সম্পর্কে অসচেতনতা...
এই জগতের রঙ্গমঞ্চে প্রত্যেকেই বহন করে এক বা একাধিক মুখোশ। অবস্থার
পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজন মত পরিধান করে নেয় উপযুক্ত মুখোশটি।

প্রতিটি মুখোশে মিশে থাকে প্রতারণার রং, মিথ্যে অভিনয়ের চরিত্র, ভালমানুষির মুখোশে কথার চাতুর্যতায় লোকদেখানো চাকচিক্য...

অনেক সময় দমকা বাতাসে খসে পরে অনেকের মুখোশ... উন্মোচিত হয় আসল চেহারা...

বেরিয়ে পড়ে থিকথিকে কলুষতায় পূর্ণ অনেক প্রিয় মুখ! যা দেখে ঘৃণায় বিকৃত হয়ে ওঠে মুখ... রি রি করে ওঠে সমস্ত শরীর...

আবার কোন কোন সময় বের হয়ে আসে কিছু মমতায় পূর্ণ... জীবনের প্রতি পদে পদে প্রতারিত... অবহেলিত মুখ... যা দেখে অজান্তেই চোখের কোণ ভিজে ওঠে ।

বিশ্বায়নের যুগে আমার ডাল রান্না

 
পাওয়া আর না পাওয়া মিলিয়ে আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের জন্ম তারিখটি ছিল আজ।

দু’দিন আগেই ভুলে পাঠানো প্রিয়জনদের শুভেচ্ছা... ব্যতিক্রমী অসামাজিক এক ছায়াসঙ্গীর ফোন কল... প্রিয়জনদের আদর ভালবাসার লেখনীতে ভরে ওঠা ফেসবুক ওয়াল... বিকেলে ছোট মামনিটির নিয়ে আসা কেক... মোমহীন মোমদানি... আত্মীয় পরিজনের আদর ভালবাসা... আরও অসংখ্য টুকরো টুকরো ঘটনা আজকের এই দিনটিকে করে তুলেছিল বর্ণীল।

ফুরফুরে মেজাজে প্রতিদিনকার মত আজও অবসরে ফেসবুকে ঘোরাঘুরি করছিলাম। পাশাপাশি চ্যাট করছিলাম অষ্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত বাঙ্গালী এক বন্ধুর সাথে। মাথায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল রাতের খাবারের চিন্তা।

আজ মুশুরির ডাল খেতে খুব ইচ্ছে করছিল। আমি রান্না করার কাজটি অতি সম্প্রতি শিখেছি। চোখের সামনে রেসিপিটি ধরা না থাকলে কোন রান্না করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না আমার।

আজই প্রথম বাগার দিয়ে মুশুরির ডাল রান্না করার উদ্দেশ্যে কম্পিউটারে রক্ষিত রেসিপির ফাইলটি খুঁজতে শুরু করলাম। কিন্তু কোনক্রমেই ফাইলটি খুঁজে পাচ্ছিলাম না।

রেসিপি ফাইলটি না পেলে তো আমার হাত পা বাঁধা... রান্না করব কিভাবে!

চিন্তা করলাম বাংলাদেশে ফোন করব মায়ের কাছে... ডাল রান্নার কায়দা কানুন জানার জন্য। কিন্তু সময়ের হিসেবে দেখলাম বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী এখন অনেক রাত। মা ঘুমিয়ে পড়েছে।

চ্যাটরত অপরপ্রান্তের বন্ধুটি জানায়... সে বিরক্ত আমার উপর... কারণ আমি সমতালে চ্যাট করছি না... উত্তর দিতে দেরী করছি আমি...

আমি তাকে জানালাম রান্না করব কিন্তু রেসিপির ফাইলটি খুঁজে পাচ্ছি না।

বন্ধুটি বলল অষ্ট্রেলিয়ায় তোমার স্ত্রীকে ফোন কর...

আমি তাকে জানালাম... স্ত্রীকে ফোন করলে সোজা বলবে “তোমার রান্নার দরকার নেই... পিজ্জা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়”। ব্যস... আমার আর ডাল খাওয়া হবে না।

বন্ধুটি বলল তাহলে ইণ্টারনেটে সার্চ কর... রেসিপি পেয়ে যাবে।

ওকে বললাম "গুড আইডিয়া"... তোমার সাথে চ্যাট শেষ করে রেসিপি খুঁজব।

বন্ধুটি জানতে চাইল আজকের রান্নার আইটেম কি..."? কি রান্নার জন্য রেসিপি খুঁজছ?

আমি বললাম ডাল?

এই কথা শুনে বন্ধুটি বলল ডাল রান্না তো খুবই সোজা... অপেক্ষা কর... আমি তোমাকে লিখে দিচ্ছি কিভাবে ডাল রান্না করতে হয়...

কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাল রান্নার রেসিপিটি পাঠিয়ে বন্ধুটি জিজ্ঞেস করল... তুমি পারবে তো রান্না করতে?

আমি সগর্বে বললাম... পারবো না মানে (!)... প্যারিসে বসে রান্না করব... তুমি অষ্ট্রেলিয়ায় বসে এর সুগন্ধ পাবে...

আমি মহা আনন্দে ডাল রান্নার উদ্দেশ্যে রান্না ঘরে গেলাম... কিন্তু সমস্যা হল রান্নাঘরে গিয়ে তো কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না...

ওহ! আপনাদেরকে বলা হয়নি। আমি ফ্রান্সে বসবাসরত আমার বড়বোনের বাসার রান্নাঘরের কথা বলছি।

বড় বোন জরুরি কাজে কানাডা গিয়েছে গতকাল।

ঘরে আর কেউ না থাকাতে রেসিপি পাওয়া সত্ত্বেও আমি কিছুই করতে পারছিলাম না।

সময় হিসাব করে দেখলাম এখন কানাডায় ফোন করলে বোনকে পাওয়া যাবে। ফোন করব করব ভাবছি... ঠিক সেই মুহূর্তে কানাডা থেকে বড় বোনের ফোন এল। আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।

হলুদ, মরিচ, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, লবণ... সবকিছুর খোঁজ নিলাম।

বন্ধুটির দেওয়া রেসিপি অনুযায়ী মহাসমারোহে শুরু করলাম ডাল রান্না।

কল্পনায় বার বার ভেসে উঠছিল... ছোটবেলায় মায়ের পাশে বসে দেখা ডাল রান্নার প্রতিটি ধাপ। বন্ধুটির দেওয়া রেসিপির সাথে আমার মায়ের ডাল রান্নার প্রতিটি ধাপের আশ্চর্য একটি মিল রয়েছে।

বিশেষ করে ডাল বাগার দেওয়ার আগের এবং পরের ধাপ গুলো যখন সম্পন্ন করছিলাম মায়ের কথা খুব মনে পড়ছিল।

পরিবর্তনের এই যুগে সবকিছু পরিবর্তিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত... কিন্তু স্থান কাল পাত্র নির্বিশেষে ডাল রান্নার ত্রিশ বছর আগের যে পদ্ধতি দেখেছিলাম এখনো সেই একই রয়ে গেছে...

ডাল রান্না করার ফাঁকে দু’একবার ফেসবুকেও উঁকি দিয়ে গেলাম। দেখলাম... এক বাংলাদেশী বান্ধবী বাংলাদেশে বসে ইউরো কাপ দেখছে আর ক্ষিস্তি খেউর করে স্ট্যাটাস দিচ্ছে... আমি ফুটবল পাগল মানুষ... অথচ ইউরোপে বসে ইউরো কাপ এর কথা বেমালুম ভুলে গেছি... সাথে সাথে টেলিভিশন চালু করে দিলাম...

অষ্ট্রেলিয়া থেকে প্রাপ্ত রেসিপি... কানাডা থেকে পাওয়া সরঞ্জাম এর খোঁজ... আর কল্পনায় ভেসে ওঠা বাংলাদেশে দেখা আমার মায়ের ডাল রান্নার ধাপ গুলো মিলিয়ে... ফ্রান্সে অবস্থিত রান্নাঘরে বসে অবশেষে ডাল রান্না সম্পন্ন করলাম।

রান্নার পর ডালের চেহারাটি কিন্তু মন্দ দেখাচ্ছিল না!

এবার খাবার পালা। খেতে বসে দেখলাম সঠিক রেসিপি, ভেজাল মুক্ত উচ্চমানের সরঞ্জাম থাকা সত্ত্বেও ডালের স্বাদটি যেন কেমন হয়েছে! ঠিক ডালের মত লাগছে না।

আমি খেতে পারছিলাম না...বুঝতেও পারছিলাম না... সমস্যাটি কোথায়...!

লবণ কি দিতে ভুলে গিয়েছি! নাকি কম দিয়েছি!... হলুদের গন্ধই বা এত প্রকট কেন!... আমি কি লবণ কম দিয়ে হলুদ দু’বার দিয়ে ফেলেছি!

আমার সাথে খেতে বসা স্থানীয় দুই বন্ধু ভাবল... এটাই বুঝি ডালের স্বাদ। কারণ বাংলাদেশী পদ্ধতিতে রান্না করা ডাল খেয়ে অভ্যস্ত নয় ওরা। ওরা ডাল খেয়ে আমার রান্নার তারিফ করছিল। আর আমি তা দেখে হাসছিলাম...

বাংলাদেশে যখন চাকুরি করেছি, তখন বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চবেতনের বিনিময়ে আগত অনেক বিশেষজ্ঞের সংস্পর্শে এসেছি... এদের মাঝে অনেকেই আসলে আমার মতই পাচক...

এদের কেউ কেউ নিজের দেশে ব্লক প্রিন্টিং এর কাজ করতে করতে... শুধুমাত্র চর্ম রং এবং বিশেষ কিছু দেশে জন্মগ্রহন করার সুবাদে... বাংলাদেশে গিয়ে... “জেন্ডার এক্সপার্ট”... আবার কেউ কেউ “রাজনৈতিক উপদেষ্টা”... হয়ে... দেশের বারোটা বাজাচ্ছে...

“এর কাছ থেকে রেসিপি”... “ওর কাছ থেকে খোঁজ খবর”... “অন্যদের করা কাজকে নতুন মোড়কে মুড়ে”...বিশেষভাবে-অনভিজ্ঞ এই বিদেশী বিশেষজ্ঞগণ... সমস্যার প্রকৃত প্রকৃতি অনুধাবন না করেই... দিস্তা দিস্তা কাগজ খরচ করে কিছু অখাদ্য পরামর্শ দিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত...

আমাদের দেশীয় উচ্চপদে আসীন কিছু অনভিজ্ঞ লোকজন... এই অখাদ্য খেয়ে বাহবা দিচ্ছে...

পরবর্তীতে বাংলাদেশেরই স্বল্পবেতনভোগী বিশেষজ্ঞদের ঘাড়ে এসে পড়ছে বিশেষভাবে-অজ্ঞদের তৈরি করা এই অখাদ্য গুলোকে হলুদ লবণ ঠিক করে কোনভাবে খাদ্য উপযোগী করে তোলার দায়িত্ব...

আজ আমার মন ভালো নেই

শৈশবে জন্মদিন নিয়ে খুব আগ্রহ ছিল তোমার। কারণ নতুন জামা পাওয়ার একটা বিশেষ সু্যোগ হত এই দিনটিতে। কপাল ভালো থাকলে বোনাস হিসেবে দু’একটা উপহারও জুটে যেত কোন কোন সময়।

স্কুল পাশ দিয়ে কলেজে পড়াকালীন পারিপার্শ্বিক কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জন্ম তারিখ পালনে বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছিলে তুমি।

নিজের জন্ম তারিখটিতে সারাদিন একা থাকাই ছিল তোমার পছন্দনীয়। বন্ধু বান্ধব সবার কাছ থেকে পালিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে কোনমতে দিনটি কাটিয়ে দিতে পারলেই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচতে তুমি।

কিন্তু সংসার ধর্ম পালন করতে গিয়ে জন্ম তারিখটিতে সবাইকে পাশ কাটিয়ে একাকী থাকা কঠিন হয়ে পড়েছিল তোমার জন্য।

হয়ত আমার আনন্দের কথা ভেবে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঠোঁটে এক চিলতে কৃত্রিম হাসি মাখিয়ে আমার হাতে হাত রেখে কাটতে হয়েছিল কেকগুলো... অনন্যোপায় হয়ে নিতে হয়েছিল উপহারগুলো...

সামাজিকতা রক্ষার প্রয়োজনে পরিবারের সাথে তোমাকে সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও যোগ দিতে হত। একরকম বাধ্য হয়েই অনুষ্ঠান গুলোতে অংশগ্রহন করতে তুমি।

তোমার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হত। কেউ না বুঝলেও আমি তোমার কষ্টকর অবস্থাটি অনুভব করতে পারতাম।

পরিবারের অনেকেই তোমাকে অসামাজিক জীব আখ্যা দিয়েছিল। তুমি কাউকেই দোষারোপ কর নি। কারণ তোমার নিজস্ব বিশ্বাস-অবিশ্বাসের জায়গা গুলো সবসময় অজানাই রয়ে গেছে সবার কাছে। এমনকি তোমার এত কাছাকাছি অবস্থান করেও অনেক কিছুই অজানা রয়ে গেছে আমারও।

ব্যথায় ভরা তোমার কথাগুলো হয়ত মাঝে মাঝে ইশারাতে বুঝিয়েছ... আমি বা মনি কেউই বুঝতে পারি নি... বলতে পার... বুঝতে চেষ্টা করি নি...

আজ ৮ জুন... তোমার জন্ম তারিখ...

অনেকদিন পর তোমার সুযোগ এসেছে... এই দিনটি একদম একাকী কাটানোর। আর কেউ না জানুক আমি জানি আজ তুমি অনেক খুশী...

আজ “শুভ জন্মদিন” বলে তোমাকে জড়িয়ে ধরতে পারবো না... পারবো না তোমার হাতে হাত রেখে কেক কাটতে...পারবো না কোন উপহার দিতে... শুধু আমি কেন কেউই পারবে না।

কোন ধরণের অভিনয়ের মুখোমুখিও হতে হবে না তোমাকে।

আজ তুমি মুক্ত...

তোমার নিত্যসংগী ল্যাপটপ, ফেসবুক, মোবাইল, ব্লগ, টুইটার আজ সবই থাকবে তাদের নিজস্ব জায়গায়... তুমি থাকবে সব কিছুর উর্ধ্বে...

অনেকেই তোমাকে খুঁজে বেড়াবে ভার্চুয়েল জগতে... জানাবে জন্মদিনের শুভেচ্ছা... কিন্তু কেউ খুঁজে পাবে না তোমায়...

হঠাৎ করে এই পৃথিবী ছেড়ে কেউ চলে গেলে ঠিক যেমনটি হয়...

সময়ের নিবিড় ছায়ায় আমি আজও জেগে থাকি একা নীরবে এই রাতে... উপলব্ধি করি আমার অনুভবে তোমার নিত্য আসা যাওয়া...

উদরপূর্তি

বিদ্যুৎ খাই,
ওয়াসার পানি খাই।

চেয়ারম্যানের বউ (!) এর গান খাই,
সাগর-রুনির জীবন খাই।

ধনীরটা খাই,
গরীবেরটা জোর করে খাই।

আলো খাই...
আলোকিত মানুষ খাই।

রক্ত খাই...
কালো বিড়াল খাই।

মূল্যস্ফীতির হার খাই,
বার্ড ফ্লু এর টিকা খাই।

প্রাকৃতিকে পরিবেশ খাই,
ধর্ম বেঁচে খাই।

মানবাধিকার খাই,
দেশের মাথা খাই।

আইন খাই, আইনের শাসন খাই,
২৬ টুকরা করে খাই।

দিলেও খাই,
না দিলে জোর করে খাই।

একা খাই,
সবাই মিলে খাই।

ভাল থাকলে একটু বেশী খাই,
খারাপ থাকলে “বেশীর” এক ডিগ্রী বেশী খাই।

আমি কে?
"অন্ধকার"... যা পাই তাই খাই!


... পত্রিকা পড়ে ছড়াটি মন থেকে বের হয়ে গেল

মুখোশ

রায়হান... বয়স ত্রিশের কাছাকাছি...

নীপা আর দুই সন্তান লইয়া আনন্দ-বেদনার সংমিশ্রনে ছোট্ট একটি পরিবার।

আদরের বড় মেয়েটির নাম রুমা... তৃতীয় শ্রেণীতে অধ্যয়নরত। ছোটটি রনি... সবেমাত্র দু’পায়ের উপর ভর করিয়া অসীম বিস্ময়ে এই ভুবন অবলোকন শুরু করিয়াছে।

নীপা একজন শিক্ষিকা।

রায়হান একটু ভীতু প্রকৃতির। শিশুকাল হইতেই শান্তিপ্রিয় গোবেচারা ধরণের। কোন কিছুতেই আগ্রহ বেশীদিন স্থায়ীত্ব পায় না। নিজের মনে যখন যাহা ইচ্ছা হয় তাহাই করিতে চায়।

শৈশবে একবার অভিপ্রায় হইয়াছিল... বিভিন্ন পণ্যের ফাঁকা কাগুজে প্যাকেট সংগ্রহ করিবার। বয়স আঠারো বছরের কম হওয়ায়, প্রাপ্তবয়স্ক পণ্যের প্যাকেট ব্যতিত, জামবাক হইতে শুরু করিয়া নাবিস্কো গ্লুকোজ বিস্কুটের ফাঁকা প্যাকেট সংগ্রহ করিয়া তাহার পড়ার টেবিলের নীচে একটি সংগ্রহশালা গড়িয়া তুলিয়াছিল।

ওর বন্ধুরা কেহ ডাকটিকেট সংগ্রহ করিত, কেহ কেহ আবার কয়েন সংগ্রহ করিত... নানবিধ শখ ছিল তাহাদের মাঝে। রায়হান প্যাকেট সংগ্রহ করিবার অভিপ্রায় বন্ধুদের মাঝে ব্যক্ত করিবার পর... সবাই একযোগে হাসিয়া উঠিয়াছিল। এই কারণে রায়হান তার সাধের ফাঁকা প্যাকেটের সংগ্রহশালাটি একটু আড়ালে আবডালেই গড়িয়া তুলিয়াছিল।

ফাঁকা কাগুজে প্যাকেট গুলোকে তাহার কাছে “মুখোশ” বলিয়া ভ্রম হইত...

জড় বস্তুকে মোড়কে আড়াল করিলে উহার নামকরণ হয় “প্যাকেট”। কিন্তু জীবন্ত “মুখ” কোন “জড়” বা “অদৃশ্য” মোড়কে আড়াল করিলে উহার নামকরণ হয় “মুখোশ”... আড়াল করাটাই মুখ্য...

রায়হান অবাক হইত প্যাকেটের আকার, নকশা, রংয়ের বাহার এবং চাকচিক্য দেখিয়া।

তাহার বোধ হইত প্যাকেটে গুলোর জন্মই হইয়াছে যাহাতে মানুষ ভ্রমে পড়ে, যাহাতে ইহার ভিতরের উপাদানটি না দেখিয়াই প্যাকেটের চাকচিক্যের ভ্রমে পড়িয়া কোন উচ্চ বাচ্য ব্যতীত খদ্দেরগণ পণ্যটি ক্রয় করিয়া লয়।

ভিতর স্থিত পণ্যটি উন্নত করার পরিবর্তে উপর স্থিত মোড়কটির চাকচিক্য বর্ধনই আসল উদ্দেশ্য। তৎসময়ে এডভারটাইজিং, মার্কেটিং, ব্র্যান্ডিং বিষয়ক জ্ঞানগুলো রায়হানের আয়ত্তে আসে নাই।

একদিন রায়হানের মা পড়ার টেবিলের নীচে ফাঁকা প্যাকেটের জংগল দেখিয়া ঝেঁটিয়ে বিদেয় করিয়া দিল। রায়হান স্কুল হইতে ফিরিয়া দেখিল তাহার শখের রংগিন “মুখোশ পৃথিবীটির” মৃত্যু ঘোষিত হইয়াছে।
...
...
...

রায়হান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকাইয়া একটি গোয়েন্দা সংস্থায় চাকুরি করিতে শুরু করিল।

গোয়েন্দা সংস্থায় তাহার প্রধান কর্ম হইল, কম্পিউটার হইতে গোপনীয় তথ্য সংগ্রহ করিয়া তদন্ত কর্মে সহায়তা করা। রায়হান মেধাবী হওয়ায় অল্পদিনেই এই কর্মে পারদর্শী হইয়া উঠিল।

ইমেইল আদান প্রদানের তথ্য...চ্যাটিং এর তথ্য... ফেসবুক এর তথ্য... টুইটারের তথ্য... সংস্থা সম্পর্কিত তথ্য... ব্যক্তিগত তথ্য... প্রেম... ভালবাসা... নৈতিক... অনৈতিক... হত্যা... গুম... আরও বহু বিষয়...

জটিল সব কর্ম অনায়াসে সম্পাদন করিবার অদ্ভুত এক ক্ষমতা থাকায় সহকর্মীরা তাহাকে ঈর্ষার চোখে দেখা শুরু করিল।

রায়হান এই কর্মে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করিত বলিয়া প্রায়শঃই নীপার বকুনি হজম করিতে হয়। তাহার কাছে গোপনীয় তথ্য উদঘাটনের এই কর্মটি অনেকটা নেশার মতই হইয়া গিয়াছে।

রায়হানের কর্ম মূলতঃ কাহারও ব্যক্তিগত পাসওয়ার্ড উদ্ধার করিয়া তাহার কম্পিউটারে প্রবেশ করা। এর পরবর্তী কর্ম গুলো তাহার সহকর্মীরা সম্পাদন করে।

রায়হান লক্ষ্য করে... প্রায়শঃই উদ্ধারকৃত গোপন তথ্যের সহিত বাস্তব জগতের মানুষটির বৈপরীত্য আকাশচুম্বী। মাঝে মাঝে ইহা বিশ্বাস করিতে হিমশিম খাইতে হয়। নিজেদের কাছেই নিজেদেরকে মিথ্যাবাদী বলিয়া বোধ হয়।

এই মানুষগুলির মুখ অদৃশ্য মুখোশে আবৃত... তাহাতে প্রতারণার এত রং, মিথ্যে অভিনয়ের এত চরিত্র... ভালমানুষির মুখোশে কথার চাতুর্যতায় এত লোকদেখানো চাকচিক্য... যে তাহাদের আসল রূপটি আমজনতা ধরিতে পারে না। উহারা সমাজ এবং দেশের উচ্চ আসনে আসীন।

এদের প্রতারণার খপ্পরে পড়িয়া জনতার নাভিশ্বাস উঠিয়া যাইতেছে। তাহাদের দুর্নীতিতে অক্ষয়ও ক্ষয়ে শেষ হইয়া যাইতেছে।

নিজেদের সুখ ক্রয় করিতে গিয়া, উহারা অপরের সুখ বিক্রয় করিতেও কুন্ঠাবোধ করিতেছে না।

রায়হানের প্রায়শঃই মনে পড়ে তাহার শৈশবের সেই "রংগিন মুখোশ পৃথিবীটির" কথা।

কিন্তু আফসোস... তাহার মায়ের মত এমন কেহই নাই যে এই মুখোশ পড়া মানুষ গুলোর মুখোশ খুলিয়া দিতে পারে... ঝেঁটিয়ে বিদায় করিয়া দিতে পারে আড়ালে লুকাইয়া থাকা সমস্ত মিথ্যে অভিনয়ের জাল...

নীপার বকুনি আর দীর্ঘশ্বাস নিত্যসঙ্গী করিয়াই রায়হানের জীবন এগিয়ে চলে।

নীতিবান দুর্নীতিবাজ

নীতিবান বলিয়া পরিচিতি আমার
মাথা উঁচু করিয়া চলি,
পথ চলিতে যাহাকেই পাই
নীতির কথা বলি।

কালো বিড়াল আর কালো বানররা
ছোটে আমার পিছে,
আমি কিন্তু বাপু দেখেও দেখি না
ধরা পড়ে যাই মিছে।

নীতির সংগা জানে না যাহারা
দুর্নীতিবাজ কহে আমায়,
নতুন করিয়া দুর্নীতির সংগা
আমায় শিখাইতে চায়।

আমি যাহা করি তাহাই নীতি
ঠিক আর বেঠিক,
আমায় নিয়া কথা বলিলে কিন্তু
শাস্তি পাইবি ঠিক।

এরপরও যদি বুঝিতে না পারিস
মূর্খ বলিব তোরে,
নীতিগতভাবে ক্ষমা চাইতে হবে
সবার সামনে করজোড়ে।

...আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার কে ক্ষমা চাইতে হবে, এই সংবাদটি পাওয়ার পর ছড়াটি রচিত হইয়াছে...

চক্ষুশূল!!!!

শিক্ষক মানুষ শিক্ষা দিতে গিয়া
চক্ষুশূল হইয়াছি ভাই,
ওদের আদেশ, ক্ষমা চাইতে হবে
এছাড়া কোন পথ নাই।

নীতির সাথে দুর্নীতির সম্পর্ক
বলিয়াছিলাম তাই,
নীতিবান সব দুর্নীতিবাজরা
ক্ষেপিয়া উঠিয়াছে ভাই।

চোর ডাকাত কভু দুর্নীতিবাজ নয়
নীতি নাই বলে ভাই,
নীতিবানরাই দুর্নীতি করে
সবাই দেখিতেছে তাই।

দুর্নীতির কথা বলিলে নীতিবানদের আঁতে
ঘা লাগিতে পারে,
আপনার নামেও ক্ষমা চাহিবার সমন
জারি হইতে পারে...

...আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার কে ক্ষমা চাইতে হবে, এই সংবাদটি পাওয়ার পর ছড়াটি রচিত হইয়াছে...

Thursday, June 7, 2012

রে মূর্খ!

যাহাদের মাঝে স্বর্গ দেখিয়াছলাম
তাহারাই আজ নরকে...
নির্লজ্জ দৌড় দৌড়াইতেছে তাহারা
কালো বানরের পিছে।
প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

সমন্বয়হীন কল্পনা ও বাস্তব-(২য় পাঠ)

পারিপার্শ্বিকতার নিরিখে বেড়ে ওঠার সাথে সাথে আমাদের কল্পনাগুলোও এর রূপ পরিবর্তন করে।

“ডুমুরের ফুল” চলচ্চিত্র দেখে ববিতার আদর ভালবাসা পেতে উন্মুখ হয়ে কল্পনার জগতে ভেসে যাওয়া... অথবা... কিশোর পাশা, মুসা আমান, রবিন মিলফোর্ড, জর্জিনা পার্কার ও রাফিয়ান এর সংগি হিসাবে কল্পনায় এডভেঞ্চারে বেরিয়ে পড়া... কিশোর বয়সের খুবই স্বাভাবিক ঘটনা... প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

Saturday, June 2, 2012

ছায়াসঙ্গী

চোখে ঘুম... হাতে কিবোর্ড... কল্পনার আকাশে অপ্সরী রূপি লাবণ্যের আনাগোনা... আর কম্পিউটারের অপরপার্শ্বে বাস্তবজগতের অপ্রকাশিত “তুমি”। এই নিয়ে চলছে আমার জীবন।

কিবোর্ডের খটখট শব্দে প্রতিদিন স্বপ্ন বেঁচে যাই। দিন, বার, তারিখ কিছুই মনে থাকে না... আসলে মনে রাখার চেষ্টা করি না... ছুটির দিনেও মনে হয় অফিস চলছে পূর্ণ গতিতে...আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

Thursday, May 31, 2012

সমন্বয়হীন কল্পনা ও বাস্তব...

প্রত্যেকেরই কল্পনার একটা জগত থাকে, পাশাপাশি একটি বাস্তব জগত। কল্পনার জগতের প্রভাব বাস্তব জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই পরে বলে আমার বিশ্বাস। আর কল্পনার প্রভাবের তারতম্যের কারণে প্রত্যেকটি মানুষের চিন্তাভাবনাতেও থাকে বিস্তর ব্যবধান।

বাস্তব জীবনের একটি সীমারেখা আছে... কিন্তু কল্পনা জগত সীমাহীন। বাস্তব জগত নিয়মে আবর্তত... অন্যদিকে নিয়ম ভাঙ্গাই হচ্ছে কল্পনা জগতের একমাত্র নিয়ম... প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

Monday, May 28, 2012

উন্মুক্ত আকাশ... উন্মুক্ত আমরা...

বুভুক্ষু এই মন সর্বক্ষণ লেখার উপকরণ খুঁজিয়া বেড়ায়। কোন কিছুর মাঝে লেখার মত প্রোটিন পাইলেই হাতগুলি নিশপিশ করিতে থাকে। ব্লগিং আমার পেশা না হইলেও নেশা অবশ্যই।

... ghorer kotha pore janlo kamne? oije omne !!!! kichu kichu kotha nijer mone chepe rakhai valo... beshi bolle ghor ar porer modhe parthokko thake na...

উপরের লেখাটি আমার এক ফেসবুক বন্ধুর ওয়াল থেকে কপি পেষ্ট করিয়াছি।

পোষ্টটিতে বন্ধুটি আমাদের সমাজে প্রচলিত একটি কথাকে ল্যাটিন বর্ণমালায় বাংলা উচ্চারণে সহজ কথায় “বাংটিন” ষ্টাইলে আরও সহজ করিয়া বলিলে “বাংলিশ” ষ্টাইলে মনের ভাব প্রকাশ করার প্রয়াস পাইয়াছেন।
  ...প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

Friday, May 25, 2012

উইথ অ্যা প্রোফাইল পিকচার...


তোমার উপস্থিতিতে আমি কেমন যেন মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ি, নিজেকে প্রকাশ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। ভারচুয়েল জগতে তোমার উপস্থিতি... তারপরও কেন এমন আবেগিত হই আমি!

কি আছে তোমার মাঝে যা আমাকে এভাবে আকর্ষণ করে। তোমার প্রতি বারবার মোহবিষ্ট হয়েও, অনেক কষ্টে বাস্তবে নিজেকে ধরে রাখি... পাছে তুমি বুঝে ফেল আমার দুর্বলতা... আমার আবেগ... আমার প্রকৃত অবস্থা...প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

অমিতের লাবণ্য নই...

...

তুমি রক্ষণশীল, পরিবর্তনবিরোধী...
...

তুমি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সম্পন্ন, বুদ্ধিমান কিন্তু অন্তর্মুখী... তোমার চিন্তার জগতের ব্যপ্তি সামান্য...
...

তুমি খুব পজেসিভ, সব কিছুতে মস্তিষ্ক ব্যবহার কর... কোন কিছু হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি কর না...
প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

Thursday, May 24, 2012

আমি তোমাদেরই একজন ছিলাম

প্রিয় বন্ধুরা,

এখন রাত ১ টা... হিসেবে তোমাদের এখন ভোর... প্রায় পাঁচটা। তোমরা সবাই এখন গভীর ঘুমে মগ্ন। সবাই যমুনা রিসোর্টে একত্রিত হয়েছ... পরীক্ষণ ও পরীবিক্ষণ বিষয়ক নতুন দিক নির্দেশনা পাবার তাগিদে।

আজ আমারও তোমাদের সাথী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়ে উঠল না। আজ যখন আমি অবগত হলাম তোমরা সবাই একত্রিত হয়েছ... আমার কেন যেন মনটা ব্যথিত হয়ে উঠল। তোমাদের সবার মুখ এক এক করে স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠল ...প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

Wednesday, May 23, 2012

তোমার বিশালতায় অবগাহিত হব...

স্বপ্নের মতো ছিল হিমালয় আর তার সর্বোচ্চ চূড়া এভারেস্ট। অধরাই ছিল এই চূড়া। হিমালয়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বেশ পুরনো। হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত আমাদের জানা ছিল আন্দিজ পর্বতমালাই পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ...প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

প্রতিফলিত স্বকীয়তা...

এই পৃথিবীতে জীবনের এবড়ো থেবড়ো পথে চলতে গিয়ে আমরা অনেক সময়ই আসল-নকলের পার্থক্য বুঝতে পারি না।


যা দেখি ঐ মূহুর্তে তা ঠিক মনে হলেও পরবর্তিতে তা ভুল বলে মনে হয়... কোন কথা এখন ঠিক শোনালেও তা পরবর্তিতে ভুল বলে প্রমানিত হয়...প্রথম আলো  ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

Tuesday, May 22, 2012

আজ অপ্সরী কে বলেছি...

আজ অপ্সরী কে একটি কথা বলেছি...! কি বলেছি...? তা বোঝার জন্য আমার এই লেখাটি দয়া করে পড়ু্ন...

উইকিপিডিয়া প্রদত্ত বিবাহের
সংগাটি পড়ে আমি অবাক হয়েছি। এখানে আবেগ, অনুভুতি, বিশ্বাস, মন, ভালবাসা, বোঝাপড়া, নির্ভরতা... বিষয় গুলোর কোন উল্লেখই নেই।

আজ বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে উপদেশমূলক কিছু বাক্য ছুঁড়ে দেওয়ার তাড়নায় এই লেখাটির অবতারণা......প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

Monday, May 21, 2012

একটু অন্ধকার চাই...!

লোডশেডিং বা লোড শেয়ারিং... যাই বলুন না কেন... শব্দগুলো বাংলাদেশে খুবই পরিচিত। শব্দগুলো ভুলে যেতে চাইলেও ভোলার কোন উপায় নেই। দেখবেন দাঁত কেলিয়ে হি হি করতে করতে দুষ্টু বালকের মত প্রতিদিন নিজস্ব উৎসাহে স্বআমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে আপনার জীবনে হাজির হয়ে জীবনকে অতিষ্ট করে তুলেছে... প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত

Sunday, May 20, 2012

কে জানে, হালুম ক'রে পড়ল যে কার ঘাড়ে...


পাঠক, আমার প্রতিটি লেখা মূলতঃ আমার অনুভুতি, অভিজ্ঞতা এবং পর্যবেক্ষণর উপর ভিত্তি করে লিখে থাকি।

আর সেই লেখার প্রাণ হল বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া আপনাদের জীবনের অভিজ্ঞতা, কল্পনা, অনুভুতিগুলো। মোটকথা আমার লেখাগুলো আপনাদের হাসি, কান্না আনন্দ আর আমার অনুভুতির মিশেল।

আপনাদের অনুভুতিগুলো আত্মস্থ করে লেখনিতে প্রকাশ করতে গিয়ে প্রায় সময়ই অশ্রু আপন আবেগেই গড়িয়ে পড়ে। আবেগের অশ্রুকে বাগে আনার বৃথা চেষ্টা আমি কখনও করি না।

কিন্তু বিবেকের তাড়নায় আমার লেখনী বন্ধ করতেও পারি না। 


সম্প্রতি আমারই খুব কাছের এক বন্ধু তার একান্ত কিছু অনুভুতি আমার সাথে ভাগাভাগি করে। আমি আমার সীমিত জ্ঞান দ্বারা যতটুকু সম্ভব তার  মানসিক শক্তি যোগানোর চেষ্টা করেছি। জানি না এতে সে কতটুকু মানসিকভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছে... 

তবে সে আমার মনোজগতে একটি চিন্তার বীজ বপন করে দিয়ে গেছে। আর তারই ফলস্বরূপ আজকের এই লেখাটির অবতারণা।
সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশে পারিবারিক কলহ এবং এর পরিণতিতে বিবাহ বিচ্ছেদ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে আমাদের খ্রিষ্টান সমাজের পরিবার গুলোর মাঝে। যা সত্যিই উদ্বেগজনক। 
বিষয়টি নিয়ে আমার ভাবনার শুরু বেশীদিনের নয়। বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে চিন্তার শাখা প্রশাখা আমার মাঝে বিস্তার লাভ করার সাথে সাথে আমি এর প্রকৃত স্বরূপ বোঝার চেষ্টা করেছি।

আমার নিজের কপালে বিবাহ বিচ্ছেদের তিলকটি এখনও না পড়াতে, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুলিতে এই বিষয়টি এখনও অন্তর্ভুক্ত হয় নি। 

এই অসম্পূর্ণতার পরিপ্রেক্ষিতে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রকৃত স্বরূপ বুঝতে, আমি দ্বারস্থ হয়েছিলাম এই কঠিন সময় অনুভুত হওয়া কয়েকজনের সান্নিধ্যে পেতে। 

একটি ঘটনা শুনুন... ( বরাবরের মত এই গল্পের চরিত্রগুলোও কাল্পনিক...)

একটি খ্রিষ্টীয়ান পরিবার। সদা হাস্যময়ী স্ত্রী কে নিয়ে ছেলেটির সুখের সংসার। মেয়েটি বিয়ের আগে একটি চাকুরী করত। কিন্তু বিয়ের পর সংসারের কথা ভেবে সে চাকুরিটী ছেড়ে দেয়।

ছেলেটিকে সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয় নিজের কাজে। মেয়েটিও ব্যস্ত সারাদিন সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম নিয়ে।

ছেলেটিকে কাজের প্রয়োজনে প্রায়ই ঢাকার বাইরে এমনকি দেশের বাইরে যেতে হয়। কিছুদিন হল ছেলেটি দেশের বাইরে গিয়েছে নিজের কাজে।

কিন্তু এরই মাঝে হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় একটি টেলিফোন এল। অপর প্রান্ত থেকে নিজের পরিচয় গোপন রেখে একজন খবর দিল যে, ছেলেটি দেশের বাইরে গিয়েছে অন্য এক মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে।

মেয়েটি এই খবরটি পাওয়ার পর ছেলেটির পরিবারকে জানায়... খবর পাওয়ার সংগে সংগে ছেলেটির আত্মীয় স্বজন ধরে নিলেন এটা তাদের ছেলেকে বিপদে ফেলার জন্য কেউ ফন্দি করেছে।

ছেলেটিকে ফোন করা হল এবং তাকে পরিবার থেকে এই ঘটনাটি বিস্তারিত জানিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হল এই বলে যে “আমাদের সম্মানহানির জন্য আমাদের পিছনে শত্রু লেগেছে”।

পরবর্তিতে প্রকাশ পায় যে, ছেলেটি সত্যিই একটি মেয়েটিকে বিয়ে করে মধুচন্দ্রিমা করতে ভারতে গিয়েছিল। মেয়েটি অন্য ধর্মাবলম্বী। ছেলেটি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরবর্তিতে স্বীকার করতে বাধ্য হয়।

পরের ঘটনা এই, আইনবিদ এর উপস্থিতিতে চুক্তিপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে ছেলেটি বড় অঙ্কের অর্থ প্রদান পূর্বক তার প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয়।

উপরোক্ত ঘটনাটি আমাদের সমাজে প্রতিদিন ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার মধ্যে একটি। 

ঘটনাটি পড়ে শত কোটি প্রশ্নের উদয় হওয়া স্বাভাবিক। এরা কারা? ঘটনাটি কেন ঘটল? স্বামী এবং স্ত্রীর মাঝে কি কোন সমস্যা ছিল? গন্ডগোল করে একসাথে থাকার চেয়ে এটাই ভাল হয়েছে... ইত্যাদি ইত্যাদি...

কোন ঘটনা বিচার এবং বিশ্লেষণে যে প্রশ্নগুলো সাধারণত আমাদের মনে উদিত হয়, তা আমাদের নিজস্ব নিজস্বতা থেকে। আমাদের প্রশ্নের ধরণগুলো যেমন ভিন্ন হয় আমাদের কল্পিত সমাধান গুলোও হয় ভিন্নতর।

আবার এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই, কোন দুর্ঘটনা নিজের জীবনে বা খুব কাছের কারও জীবনে ঘটলে আমরা যে দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করি... অন্যদের জীবনে সেই একই ধরণের ঘটনা বিবেচনায় আমাদের দৃষ্টীভঙ্গির বিভিন্নতা দেখা যায় প্রায়শই।

এই লেখাটিতে আমি উপরোক্ত ঘটনাটির শেষ অধ্যায়টি নিয়ে আলোকপাত করতে চাই।

আমি পূর্বেই উল্লেখ করেছি, বড় অঙ্কের অর্থ প্রদান পূর্বক ছেলেটি তার প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয়।

বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যটি সম্পাদন করার পর ছেলের পরিবারের গুরুজনদের মাঝে সম্মান রক্ষার একটি ব্যাপার চলে আসে। সম্মান রক্ষার অভিনব পদ্ধতি হিসাবে তারা প্রচার শুরু করেন সমস্ত কিছু আইন মেনে সম্পাদন করা হয়েছে।

মেয়ের অনুমতি নিয়েই সব করা হয়েছে। মেয়েকে ঠকানো হয়নি। মেয়ের অধিকার রক্ষা করা হয়েছে। যদিও তাদের কাছে এই প্রশ্নের কোন উত্তর ছিল না, কি ভাবে মেয়ের অধিকার রক্ষিত হয়েছে।     

খ্রিষ্টান সমাজের বেশ কয়েকজন নারী নেতৃ ধিক্কার দিয়ে বলেন “মেয়েটি টাকার লোভে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছে”। ছেলেটির বিরুদ্ধে মামলা করা যেত। আমরা সমস্ত সাহায্য করতে পারতাম। যদিও সেই নেতৃদের অনেকেই এই ঘটনাটি বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার আগে থেকেই অবহিত ছিলেন। কিন্তু নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে সাহায্য করার প্রয়োজন অনুভব করেন নি।

খ্রিষ্টীয় সমাজ এবং  ধর্মীয় নেতা-নেতৃগন এই ঘটনার পর বলতে শুরু করেন, খ্রীষ্টীয়ান ধর্মীয় আইন অনুযায়ী এই ধরণের বিবাহ বিচ্ছেদ গ্রহনযোগ্য নয়। এটা ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শয়তানের কাজ। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য এই নেতা-নেতৃগনের অনেকেই এই ঘটনাটির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।

এই ঘটনার সাথে জড়িত আইনবিদরা দুটি শব্দ বেছে নিলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য, শব্দ দুটি হচ্ছে “mutual understanding” বাংলা করলে যার অর্থ দাঁড়ায় “পারস্পরিক সমঝোতা”। তারা বলতে শুরু করেন সব কিছু আইনসিদ্ধ ভাবে “mutual understanding” এর ভিত্তিতে করা হয়েছে।  

সাধারন দৃষ্টিকোণ থেকে উপরোক্ত ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে প্রথমত যে প্রশ্নগুলো আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায় তা হল:

? মেয়েটি কি আইনি লড়াই করতে চেয়েছিল? আইনি লড়াইয়ের ব্যাপারে ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে সাহায্যের কোন আশ্বাস কি মেয়েটি পেয়েছিল?

? আইনি লড়াই না করে এই ঘটনাটি মেনে নিতে মেয়েটির উপর কি কোন চাপ বা হুমকি প্রদান করা হয়েছিল ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে? যার ফলশ্রুতিতে মেয়েটি mutual understanding এর নামে লিখিত চুক্তিতে স্বাক্ষর প্রদান করতে বাধ্য হয়? 

? কোন কিছু বাধ্য হয়ে মেনে নেওয়া আর mutual understanding কি একই অর্থ বহন করে?

? ছেলেটির পরিবার কি ছেলেটির এই ইচ্ছাকৃত অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল? নাকি mutual understanding - এর নামে অর্থের বিনিময়ে ছেলেটির অন্যায় কে আড়াল করাই ছিল ছেলেটির পরিবারের মূল লক্ষ্য? যদি তাই হয় তাহলে mutual understanding - এর নামে অর্থের বিনিময়ে সম্পাদিত এই চুক্তি নৈতিকভাবে কতটুকু গ্রহনযোগ্য?

?মেয়েটি কি সত্যিই টাকার লোভে পড়ে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছে?

? অন্যায় করেও অর্থের বিনিময়ে mutual understanding -এর নামে রক্ষা পাওয়ার এক অভিনব পন্থা ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে কি উদাহরণ হিসাবে তুলে দেওয়া হল এই ঘটনার মাধ্যমে?

জানতে ইচ্ছা করে বিবাহের সময় সবাই mutual understanding  এর মাধ্যমে চার্চ এ গিয়ে ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুশাসন অনুযায়ী বিয়ে করে, কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের সময় কেন ধর্মকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার এই প্রচেষ্টা। 

আসুন দেখি বাইবেলে বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে কি লেখা আছে...

ঈশ্বর যাহাদের যোগ করিয়া দিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক...। যে কেহ আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া অন্যাকে বিবাহ করে, সে তাহার বিরুদ্ধে ব্যভিচার করে; আর স্ত্রী যদি আপন স্বামীকে পরিত্যাগ করিয়া আর এক জনকে বিবাহ করে, তবে সেও ব্যভিচার করে...। মার্ক ১০:৯,১১,১২

আর বিবাহিত লোকদের এই আজ্ঞা দিতেছি- আমি দিতেছি তাহা নয়, কিন্তু প্রভুই দিতেছেন- স্ত্রী স্বামীর নিকট হইতে চলিয়া না যাউক- যদি চলিয়া যায়, তবে সে অবিবাহিত থাকুক, কিম্বা স্বামীর সহিত সম্মিলিতা হউক- আর স্বামীও স্ত্রীকে পরিত্যাগ না করুক...। ১ করিন্থীয় ৭:১০

আর আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, ব্যভিচার দোষ ব্যতিরেকে যে কেহ আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া অন্যাকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে; এবং যে ব্যক্তি সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিবাহ করে, সেও ব্যভিচার করে...।  মথি: ১৯:৯ এখানে উল্লেখ্য যে ব্যভিচার (Sexual immorality i.e.. Adultry) শব্দটির উৎপত্তি গ্রীক porneia থেকে যা থেকে ইংরেজী pornography শব্দটির উৎপত্তি।

তথাপি অবিশ্বাসী যদি চলিয়া যায়, চলিয়া যাউক... ১ করিন্থীয় ৭:১৫

বাইবেলের পুরাতন এবং নতুন নিয়মে আরও বহু অংশে বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পর্কে বিভিন্ন ধরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। 

কিন্তু অর্থের বিনিময়ে  mutual understanding এর উপর ভিত্তি করে বিবাহ বিচ্ছেদের কোন নির্দেশনা আমার দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। 

তবে শুনেছি খ্রীষ্টানদের জন্য বিবাহ বিচ্ছেদের বাংলাদেশীয় যে আইন রয়েছে তাতে ধর্মকে পাশ কাটিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের সুযোগ রয়েছে।

আমি আইনবিদ নই তাই আইনের ব্যবচ্ছেদ করা আমার কর্ম নয়। তারপরও খ্রীষ্টিয়ানদের জন্য লিখিত বিবাহ বিচ্ছেদের বাংলাদেশীয় আইনগুলো আমি মনোযোগ সহকারে পড়েছি। কিন্তু mutual understanding এর মাধ্যমে কিভাবে বিচ্ছেদ ঘটানো হবে বা mutual understanding এর মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদের পূর্বশর্ত গুলো কি হবে তা বুঝে উঠতে পারি নি।

অপারগ হয়ে mutual understanding এর মাধ্যমে সফলভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানো এক আত্মীয়ের সাথে কথা বললাম। কিন্তু উনিও সঠিক কোন উত্তর দিতে পারলেন না। উনি বললেন এটা উকিল বলতে পারবে।

সাধারন অর্থে mutual understanding means sympathy of each person for the other.

Mutual understanding এর মাধ্যমে  বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে দু'পক্ষেরই শক্ত ভিত্তি থাকা আবশ্যকীয়।

কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় কোন অন্যায় বাধ্য হয়ে মেনে নেওয়া আর mutual understanding কি একই অর্থ বহন করে?

ন্যায়-অন্যায়ের মাপকাঠি তো ঘটনা বিবেচনায় পৃথক হতে পারে না।

তবে ইহা অনস্বীকার্য যে জীবনের পরিক্রমায় বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সময় দাম্পত্য জীবন এমন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে যে বিবাহ বিচ্ছেদ অপরিহার্য হয়ে পড়ে। স্বামী- স্ত্রী দু’জনেরই সমস্যা এবং এর পিছনে দু’জনেরই যুক্তিযুক্ত প্রমাণ থাকার কারণে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে পরিবারের সম্মতিক্রমতে এই বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানোতে বিরোধীতা কারও কাম্য নয়।

কোন কোন ক্ষেত্রে যথেষ্ট যুক্তি প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ বছরের পর বছর ঝুলে আছেন, কিন্তু কোন সমাধানে এখনো পৌঁছুতে পারেন নি। অনেকে আবার প্রমাণের অভাবে এবং সমাজের ভয়ে দুঃসহ দাম্পত্য জীবন মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন, এই পরিস্থিতিও কারও কাম্য নয়। 

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই পদ্ধতির অপপ্রয়োগ নিয়ে। অনেক পরিবার এই বিষয়টি ভালভাবে না বোঝার কারণে mutual understanding-এর ফাঁদে পড়ে সব হারাচ্ছেন বা হারাতে চলেছেন।

ইদানিং দেখা যাচ্ছে অনেকে তাদের হীন স্বার্থ চরতার্থ করতে, নিজেদের অনৈতিক কার্যকলাপ কে আড়াল করতে বা অনৈতিক সুপ্ত ইচ্ছার বাস্তব রূপ দিতে এই পদ্ধতির আশ্রয় নিচ্ছে বা নেওয়ার চেষ্টা করছে।   


উপরে বর্ণিত ঘটনাটি তারই একটি বাস্তব উদাহরণ।

একপক্ষ নিজের অনৈতিক সম্পর্কের বলি করছে অপর পক্ষকে। নিজের অনৈতিক কার্যকলাপের পথ সুগম করার লক্ষ্যে অপরপক্ষকে চাপ প্রয়োগ করে mutual understanding  এর মাধ্যমে ডিভোর্স দিচ্ছে বা দেওয়ার পায়তারা করছে। 

এই সব একপাক্ষিক ঘটনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কঠিন কাজটি হচ্ছে mutual understanding -এ অন্যপক্ষকে রাজী করানো।

অপর পক্ষকে mutual understanding -এ রাজি করানোর জন্য পারিবারিক চাপ প্রয়োগ, হুমকি প্রদান এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে আইনের ভয়ও দেখানো হচ্ছে।

অনেক ক্ষেত্রে সন্তানকে জিম্মি করে mutual understanding এ রাজী করানোর অপচেষ্টাও করা হচ্ছে।

এই ধরণের ঘটনার ক্ষেত্রে কিছু উক্তি অনেকের মুখে প্রায়ই শোনা যায়। তা হচ্ছে " মন উঠে গেলে কি করবে... বা... সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে জোর করে জোড়া লাগানো সম্ভব না... বা... জোর করে একসাথে থাকার কোন মানে হয় না।"

কোন কোন ক্ষেত্রে কথাটি খুবই সত্যি।

কিন্তু উপরোক্ত ঘটনাটি বিবেচনায়, প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত  অনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে  কেউ যদি "মন উঠে গেছে বলে" সমঝোতার মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদের দাবী তোলে তা কতটুকু যুক্তিযুক্ত? ... তাই বলে কি অন্যায়কারির অন্যায় বা অনৈতিক সম্পর্কটি মেনে নিতে হবে? আর সারাজীবন হৈমন্তী শুকলার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে "আমার বলার কিছু ছিল না..." গানটি যপে জীবন নদীতে বৈঠা মারতে হবে!!! 

যাক যা হয়ে গেছে তা নিয়ে কথা বলেছি অনেক। এবার আসুন একটু সামনের দিকে তাকাই...  

আসুন আমরা আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করি । সমাজে নিজেদের দায়িত্ব পালনে আরও সচেষ্ট হই। নিজের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করা থেকে বিরত থাকি। অন্যকে বিশেষ করে সন্তানদের বঞ্চিত না করি।

আমাদের নিজেদের স্বার্থপরতার কারণে আর কোন মেঘ বালিকার জীবনে যেন ঘোর অমানিশা নেমে না আসে।

Mutual understanding বা “পারস্পরিক সমঝোতার” ভিত্তিতে পরিবার না ভেঙ্গে পরিবার গঠনে সচেষ্ট হই।

চলুন আজ থেকেই আমরা আমাদের চেষ্টা শুরু করি... তা না হলে কে জানে বিচ্ছেদের বার্তা নিয়ে mutual understanding নামক জুজুবুড়ী হালুম ক'রে যে কার ঘাড়ে কখন এসে পড়বে তার কোন ঠিক নেই।

প্রশ্ন উঠতে পারে সমাজে এই ধরণের ঘটনা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা কি পদক্ষেপ নিতে পারি...  প্রথম আলো ব্লগে প্রকাশিত আমার  লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন... বিস্তারিত