Sunday, July 1, 2012

একটুস ভেবে দেখবেন কি...!

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের মধ্যে দাঙ্গার পর কয়েক দিন ধরে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্টগার্ড তত্পর রয়েছে।

জানা যায়, একজন বৌদ্ধ নারীকে ধর্ষণের ঘটনার জের ধরে বার্মার রাখাইন প্রদেশে বৌদ্ধ-মুসলমানদের মাঝে এই দাঙ্গার সূত্রপাত।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

তবে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থী ঢুকতে দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে আসছে বাংলাদেশ।

নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দানের পক্ষে-বিপক্ষে প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে।

একদিকে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ প্রদান... অন্যদিকে বাংলাদেশে সরকারের আশ্রয় প্রদানের বিপক্ষতা করে নানা ধরণের বিবৃতি... মিডিয়াও বসে নেই... প্রতিদিনই তাদের ক্যামেরায় তুলে আনছে শরণার্থীদের করুন
জীবনকাহিনী...

এই বিষয়টি নিয়ে কোন ধরনের তর্ক বিতর্কে অবতীর্ন হওয়ার অভিপ্রায় আমার নেই।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে আমার একটি অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করার জন্য আজ এই লেখাটি লিখতে বসেছি।

জাতিসংঘে চাকুরি করার সুবাদে আমি সরেজমিনে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনের সুযোগ পেয়েছিলাম।

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মূলতঃ দু'দফায় বাংলাদেশে এসেছিলেন – একবার ১৯৭৮ সালে; আরেকবার ১৯৯২-৯৩ সালে।

সরকারী হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে, দুটি ক্যাম্পে – একটি টেকনাফের নয়াপাড়ায় এবং আরেকটি উখিয়ার কুতুপালংয়ে- প্রায় ২৮,০০০ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে।

যদিও আন্তর্জাতিক সংস্থা UNHCR এর হিসাব অনুযায়ী এই সংখ্যা ৩১,০০০ এর কিছু উপরে। বাংলাদেশে সংখ্যা নিয়ে গোলমাল নতুন কিছু নয়।

২৮,০০০ বা ৩১,০০০ যাই হোক না কেন... এই নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীর বাইরে আরও প্রচুর “অনিবন্ধিত” রোহিঙ্গা শরণার্থীর বসবাস রয়েছে ঐ এলাকায়।

তাদের সঠিক সংখ্যা অদ্যাবধি নিরূপন করা হয় নি। তবে এদের সংখা তিন থেকে পাঁচ লাখ পর্যন্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

মিয়ানমার হতে আগত ক্যাম্পে অবস্থানকারী নিবন্ধিত শরণার্থীরা সাহায্যদাতাদের আশীর্বাদে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে...

পাশাপাশি ঐ এলাকায় বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে।

সাহায্যদাতারা রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে নিবন্ধিত শরণার্থীদের জন্য সাহায্য ঢেলে দিলেও... আশে পাশের অনিবন্ধিত শরণার্থীদের সাহাযার্থে কিছুই করতে পারছে না।

সরকারের অনাগ্রহই এর জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হয়।

নতুন করে শরণার্থীদের আশ্রয় দানের ব্যাপারে দ্বিমত থাকলেও যেসব রোহিঙ্গা শরণার্থী ইতোমধ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করে দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছে তাদেরকে নিবন্ধিত করে প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য সরকারকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

No comments:

Post a Comment

Thank you for your time. I will get back to you soon.
Nathan