Friday, May 11, 2012

Marriage- Coffee Talk

 পাঠক লেখাটির মূল অংশে যাওয়ার পূর্বে আসুন দেখি বিবাহ কি? বিবাহ কি ভাবে সম্পন্ন হয়? মানুষ কেন বিবাহ করে? 


এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে উইকিপিডিয়া সাধারণভাবে বিবাহ বলতে কি লিখেছে তা নিচে কপি করে দিলামঃ


বিবাহ হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দু'জন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বিভিন্ন দেশে সংস্কৃতিভেদে বিবাহের সংজ্ঞার তারতম্য থাকলেও সাধারণ ভাবে বিবাহ এমন একটি প্রতিষ্ঠান যার মাধ্যমে দু'জন মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও যৌন সম্পর্ক সামাজিক স্বীকৃতি লাভ করে।


সাধারণত আনুষ্ঠানিকভাবে আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়। বহু সংস্কৃতিতেই বিবাহ দু'জন বিপরীত লিঙ্গের মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও কিছু সংস্কৃতিতে বহুগামী বিবাহ ও কিছু সংস্কৃতিতে সমকামী বিবাহও স্বীকৃত।


বিবাহের মাধ্যমে পরিবারের সূত্রপাত হয়। এছাড়া বিবাহের মাধ্যমে বংশবিস্তার ও উত্তরাধিকারের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিবাহের মাধ্যমে পরস্পর সম্পর্কিত পুরুষকে স্বামী (পতি)এবং নারীকে স্ত্রী (পত্নী) হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

স্বামী ও স্ত্রীর যুক্ত জীবনকে "দাম্পত্য জীবন" হিসাবে অভিহিত করা হয়। বিভিন্ন ধর্মে বিবাহের বিভিন্ন রীতি প্রচলিত। একইভাবে বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন প্রথায় বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বিবাহ মূলত একটি ধর্মীয় রীতি হলেও আধুনিক সভ্যতায় এটি একটি আইনী প্রথাও বটে।


বিবাহবহির্ভুত যৌনসঙ্গম অবৈধ বলে স্বীকৃত এবং ব্যাভিচার হিসাবে অভিহিত একটি পাপ ও অপরাধ

হিন্দুশাস্ত্রে আট প্রকারের বিবাহরীতির উল্লেখ আছে। যথা, ব্রাহ্ম, দৈব, আর্ষ, প্রাজাপত্য, গান্ধর্ব, পিশাচ ও রাক্ষস বিবাহ।

রাক্ষস বিবাহ? হিন্দুশাস্ত্রে বর্ণিত একটি বিবাহ রীতি৷ এই রীতি অতীতে ক্ষত্রিয় জাতির মধ্যে প্রচলিত ছিল। এই রীতি অনুসারে পুরুষ নারীকে হরণ করে বিবাহ করতেন।




কিছুদিন পূর্বে মানবাধিকার নিয়ে “অধিকার? নাকি দায়িত্ববোধ+অধিকার?” শিরোনামে আমার ব্লগে একটি লেখা পোষ্ট করেছিলাম।

লেখাটিতে লিভ টুগেদার যে এখন অনেক দেশেই মানুষের অধিকার হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বা পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে তার উল্লেখ করেছিলাম। লিখেছিলাম লিভ টুগেদার এর ক্ষেত্রে কোন ফরমালিটির প্রয়োজন পড়ে না যা গতানুগতিক বিবাহের ক্ষেত্রে অত্যাবশকীয়।

একুশ শতকের এই দিনে লিভ টুগেদার বড় কোনো সমস্যা নয় অনেক দেশেই।


গতকাল দেখলাম সমকামীদের বিবাহের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামা মত দিয়েছেন।
এক জরিপে দেখা যায়, ৩৯ শতাংশ মার্কিন নাগরিক সমকামী জুটির আইনসিদ্ধ বিয়ের পক্ষে মত দেয়। ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ মার্কিনি মনে করে, সমকামীদের সুশীল সমাজ গড়ার অধিকার আছে। তবে তাদের বিয়ে করার অধিকারের বিপক্ষে তারা। প্রায় ২৭ শতাংশ মার্কিনি সমকামীদের বিয়ে কিংবা সুশীল সমাজ গঠনের বিপক্ষে।


পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশেই লিভ টুগেদার বৈধ হওয়ার পরও অনেকেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকেন যা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা।


নিকোলা সারকোজি ফ্রান্সের ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট  ২০০৮ সালে জানুয়ারীতে ভারত সফর করবেন বলে ঠিক করেন। কিন্তু সমস্যা হল তার বান্ধবীকে ব্রুনি কে নিয়ে। লিভ টুগেদার ফ্রান্সে আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য হলেও ভারতে গ্রহণযোগ্য নয়।


বিয়ে না করেই ভারতে গেলে ব্রুনি কী রকম সমাদর পেতে পারেন, সে ব্যাপারে ভারত এবং ফ্রান্সের কর্মকর্তারা একান্ত বৈঠকও করেন। এ ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সাধারণত আমরা দম্পতিদের বেলায় প্রোটোকল সুবিধা দিয়ে থাকি


বোঝেন অবস্থা। সে সময় ভারত সফরে গেলে তাঁরা হোটেল স্যুটে একসঙ্গে থাকবেন কি না কিংবা আনুষ্ঠানিক ভোজে ব্রুনি কোথায় বসবেনএসব নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলো সরব হয়ে ওঠে।


শেষপর্যন্ত অবশ্য ব্রুনিকে ছাড়াই সারকোজি ভারত সফরে যান।


এরপরে ফেব্রুয়ারি মাসে সারকোজি ও ব্রুনি বিয়ে করেন এবং ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ের পর একসঙ্গে তাঁরা ভারত সফরে যান।


নবনির্বাচিত ফ্রান্সের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ এবং তার বান্ধবী ত্রিয়াভেলাও অনেকটা এমন সমস্যায় পড়েছেন।


নিজ দেশে বিয়ে না করেও একত্রে থাকতে (লিভ টুগেদার) কোনো সমস্যা নেই ফ্রান্সের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ এবং তাঁর বান্ধবী ভ্যালেরি ত্রিয়াভেলার।


কিন্তু ফরাসী ফার্স্ট লেডি হিসেবে অবিবাহিত ত্রিয়াভেলা যখন বিদেশ সফরে যাবেন, তখনই নানা কূটনৈতিক সংকটের মুখে পড়তে পারেন।


এত সব কূটনৈতিক দ্বিধা-দ্বন্দ্বের অবসান ঘটাতে ধারণা করা হচ্ছে, ১৫ মে এলিসি প্রাসাদের (ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন) চাবি হাতে পাওয়ার আগেই ওলাঁদ এবং ত্রিয়াভেলা বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন।


যদি তাঁরা  বিয়ের পিঁড়িতে না বসেন, তবে অবিবাহিত এই ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধান ও তাঁর বান্ধবীকে যথাযথ প্রোটোকল দিতে বিব্রতবোধ করতে পারে নির্দিষ্ট কয়েকটি রাষ্ট্র।


গণমাধ্যম-কর্মী ফার্স্ট লেডি ত্রিয়াভেলা বলেছেন,


আমি নিশ্চিত নই সব সময় এটা নিয়ে কথা উঠবে কি না। হয়তো ভ্যাটিকানে পোপের সঙ্গে দেখা করতে গেলে এটা আলোচনায় আসতে পারে। সত্যি বলতে কি, এটা আমার জন্য কোনো অস্বস্তির ব্যাপার নয়। বিয়ের প্রশ্নটা মোটের ওপর আমার ব্যক্তিগত জীবনেরই একটা অংশ


ভ্যাটিকান ছাড়াও আরব উপসাগরীয় ইসলামি সংস্কৃতির রক্ষণশীল দেশগুলো এবং ভারতের মতো রক্ষণশীল সমাজেও তাঁকে কূটনৈতিক সংকটে পড়তে হতে পারে। বিয়ে না করে একসঙ্গে বাস করাটা ইসলামে নিষিদ্ধ এবং সৌদি আরবের মতো রক্ষণশীল সমাজে বিষয়টি আরও নেতিবাচকভাবে দেখা হয়ে থাকে।


নিজ দেশে লিভ টুগদার গ্রহণযোগ্য হলেও, কয়েকটি রাষ্ট্র প্রোটোকল দিতে বিব্রতবোধ করতে পারে এই লক্ষ্যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াকে কি বলিয়া অভিহিত করা যায় বলুন তো?
বর্তমান ঘটনা গুলোর প্রেক্ষিতে বিবাহ ব্যাপারটি কফি টক হিসাবে মন্দ নয়, কি বলেন পাঠক!

No comments:

Post a Comment

Thank you for your time. I will get back to you soon.
Nathan