Thursday, April 26, 2012

শতকরা শুণ্য -0=0=+0

মানুষের জীবনে এমন কিছু মুহুর্ত আসে যখন সুখ দু:খ কোন কিছুই আর তাকে স্পর্শ করে না। সব কিছুর স্বাদ একই রকম মনে হয়। একটা স্থবির অনুভুতি।

আমারও মাঝে মাঝে এই ধরনের অনুভুতি হয়। কোন কিছুই আমার স্থবিরতা কে দূর করতে পারে না। আনন্দ বা দু:খ কোন কিছুই আমাকে স্পর্শ করে না। তখন মনে হয় প্রতিদিন একটু একটু করে নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলছি।

প্রশ্ন জাগে... মানুষ কি পঞ্চইন্দ্রীয় বিশিষ্ট একটি আবদ্ধ বাক্স মাত্র? এই পঞ্চইন্দ্রীয় দ্বারা মানুষ কি তার চারিদিকের বাস্তবতাকে সত্যিকার অর্থে দেখতে, বুঝতে বা অনুভব করতে পারছে?

তাহলে...
কেন মানুষ প্রজাপতি বা মৌমাছির মত 10-9মি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অতিবেগুনী রশ্মি দেখতে পারে না? মানুষের এই অক্ষমতার কারণে ফুলের প্রকৃত রং বা সৌন্দর্য তাদের চোখে ধরা দেয় না।

কেন মানুষ ২০-২০,০০০হার্টজ এর নীচে বা উপরে কোন শব্দতরঙ্গ শুনতে পায় না? যা একটি মশা বা কুকুর পারে।

কেন ঈগলের মত তীক্ষ্ন দৃষ্টি মানুষের নেই।  
কেন রাতের অন্ধকারে মানুষ কিছুই দেখতে পারে না, যা প্যাঁচা বা বিড়াল পারে?

কেন মানুষ, বাদুরের মত প্রতিধ্বনি অনুধাবন করে খুব সহজেই রাতের আঁধারে কোন কিছুর অবস্থান নির্ণয় করতে বা ঘুরে বেড়াতে পারে না?

কেন কুকুরের ঘ্রানশক্তি মানুষের চেয়ে ১,০০০ থেকে ১০,০০০,০০০  গুণ বেশী? 
কেন হাতি তিন মাইল দূরত্ব থেকে পানি কোথায় পাওয়া যাবে তা বুঝতে পারে, মানুষ পারে না?  

ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে আরও একটি ইন্দ্রিয়ের কথা প্রায়ই শোনা যায়। যদিও বিজ্ঞানীরা এই ব্যাপারটি নিয়ে এখনও সন্দিহান। এখনও জানা যায় নি কোথায় এর অবস্থান। অনেকে দাবী করেন তাদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে আরও একটি ইন্দ্রিয় রয়েছে। কিন্তু সব মানুষই কি এই দাবী করতে পারে?  

এছাড়াও,  আরও কিছু বিষয় বস্তু নাকি রয়েছে এই পৃথিবীতে যা দেখা যায় না, শোনা যায় না, গন্ধ নেই, অনুভব করা যায় না, তারপরও এগুলো নাকি  মানুষের ধারনাকে প্রভাবিত করে। যা পৃথিবীকে অন্য চোখে দেখতে শেখায়। অনেকে আবার ঐ পথে চিন্তা করতে গিয়ে সংসার ধর্ম সব ছেড়ে অন্য পথে চলে যাচ্ছে। সব মানুষ কি তা পারে?  

মানুষের জীবনের স্থবিরতার কারণটা বুঝতে পারছি। পঞ্চইন্দ্রীয়ের এই সীমাবদ্ধতার কারণে হয়ত মানুষ যা দেখে তার পূর্ববর্তি জীবনে, তাতে অনেক ভুল থাকে, কারণ ঈগলের মত তীক্ষ্ন দৃষ্টি তার নেই। মানুষ যা শুনে, তাতে হয়ত অনেক মিথ্যা থাকে, কারণ বাদুরের মত কর্ণ তাদের নেই। মানুষ যে স্পর্শকে পবিত্র ভাবে, তাতে হয়ত অনেক অপবিত্রতা থাকে। মানুষ দুর্গন্ধকে সুগন্ধ ভেবে ভুল করে, কারণ তার ঘ্রানশক্তি কুকুরের মত তীক্ষ্ন নয়। মানুষ বুঝতে পারে না কে তার শত্রু আর কে মিত্র।    

মানুষ তার ইন্দ্রিয়ের এই সীমাবদ্ধতার জন্য প্রতারিত হয়?????? 

কিছু মানুষের জীবনে প্রতারক এত নি:শব্দে প্রবেশ করে যে সেই শব্দ সে শুনতে পায় না, কারণ তার কর্ণ ২০-২০,০০০ হার্টজ এর নীচে বা উপরে কোন শব্দ শুনতে পায় না। কিছু মানুষ আগে থেকে তার বিপর্যয় আঁচ করতে পারে না, যা পিঁপড়া বা অন্যান্য প্রানি ভুমিকম্প বা সুনামির মত যে কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর আগে আঁচ করতে পারে। 

মানুষ মাঝে মাঝে বুঝতে পারে না তার আসল কল্যাণ কোথায়। কার সাথে সম্পর্ক করলে বা কার আনুগত্য প্রকাশ করলে তার লাভ হবে এ জ্ঞান অনেকেরই থাকে না। মানুষ তখন নির্বোধের মত কাজ করে।

তারপরও মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, আশরাফুল মাখলুকাত, যার জীবনের গাণিতিক সমীকরণ -0=0=+0 হয়ে দাঁড়ায় কোন কোন সময়।  

No comments:

Post a Comment

Thank you for your time. I will get back to you soon.
Nathan